মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করা আমাদের অঙ্গীকার: শিক্ষা উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:০৮ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকার ঐতিহ্যবাহী সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ২৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, “মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও আধুনিক রূপে গড়ে তোলা আমাদের অঙ্গীকার।” তিনি উল্লেখ করেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাদ্রাসা শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ, যেখানে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী শিক্ষালাভ করে সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “১৭৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ২৪৬ বছরের গৌরবময় ইতিহাসের অধিকারী। মাদ্রাসা শিক্ষার ঐতিহ্যে যুক্তিবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, বিজ্ঞানচর্চা ও ধর্মবিদ্যা একসঙ্গে যুক্ত ছিল। আমরা চাই এই ধারাকে পুনরুজ্জীবিত করে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বিত রূপ তৈরি করতে।”
তিনি আরও বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা মাদ্রাসার কেন্দ্রবিন্দু থাকলেও শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে আধুনিক শিক্ষার উপাদান সংযোজন জরুরি। এজন্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যেই একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
অধ্যাপক ড. আবরার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের (এলামনাই) সম্পৃক্ততাকে প্রশংসা করেন এবং বলেন, “এলামনাইদের অংশগ্রহণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। রাষ্ট্র ও সমাজকে একসঙ্গে এগিয়ে এসে এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোর অগ্রগতিতে অবদান রাখতে হবে।”
তিনি শিক্ষক সংকট, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা, বিশুদ্ধ পানি ও পরিবহন সংকটসহ বিভিন্ন বিষয় দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। পাশাপাশি ২৪৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে সরকারি আলিয়া মাদ্রাসাকে আরও আধুনিক ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা সকল ধর্ম ও পেশার মানুষের জন্য সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাসের অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহিষ্ণুতার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “সমাজে বিভেদ নয়, সহমর্মিতা ও যুক্তিবাদী চিন্তাই আমাদের পথপ্রদর্শক হবে। ধর্মীয় বিশ্বাসের সঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে আলিঙ্গন করে আমরা উন্নত ও কর্মক্ষম নাগরিক হিসেবে দেশ ও সমাজে অবদান রাখতে পারব।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ওয়াজির হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও শিক্ষা অনুরাগীরা অংশ নেন।