বায়োটেকনোলজি নির্ভর ভবিষ্যতের পথে হাঁটতেই হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা


বায়োটেকনোলজি নির্ভর ভবিষ্যতের পথে হাঁটতেই হবে: শিক্ষা উপদেষ্টা

বাংলাদেশকে টেকসই স্বাস্থ্য, কৃষি ও পরিবেশের সমাধানে বায়োটেকনোলজি নির্ভর ভবিষ্যতের পথে হাঁটতেই হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে শুরু হওয়া ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও কৃষি বিষয়ক বায়োটেকনোলজি সম্মেলন (আইসিবিএইচএ ২০২৫)-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।

গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশ বায়োটেকনোলজিস্টস (জিএনওবিবি) ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই দুই দিনের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ ও টেকসই স্বাস্থ্য ও কৃষির জন্য প্রতিকার। একইসঙ্গে জিএনওবিবি তাদের বৈশ্বিক কার্যক্রমের ২০ বছর পূর্তি উদযাপন করছে।

উদ্বোধনী ভাষণে সি আর আবরার বলেন, আমরা বায়োটেকনোলজি বিপ্লবের দোরগোড়ায় আছি। এখনই এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। তার মতে, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের অবক্ষয় স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে উঠছে। এই সংকট মোকাবিলায় কার্যকর সমাধান দিতে পারে বায়োটেকনোলজি।

তিনি আরও বলেন, কৃষিকে বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা কল্পনা করা যায় না, আবার পরিবেশগত স্থায়িত্ব ছাড়া খাদ্য নিরাপত্তাও সম্ভব নয়। এই আন্তঃসম্পর্কই আমাদের এগিয়ে নেবে।

বাংলাদেশের অর্জন তুলে ধরে তিনি বলেন, উচ্চ ফলনশীল ও সহনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন, দেশীয়ভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিট তৈরি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় মাইক্রোবিয়াল প্রযুক্তির ব্যবহার ইতোমধ্যেই সাফল্যের দৃষ্টান্ত। এসব অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে আরও দূর এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা যোগাবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি জাতীয় বায়োটেক উদ্ভাবন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, দেশীয় ও প্রবাসী বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠান একাডেমিয়া ও শিল্পখাতের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার বায়োটেক হাবে রূপান্তরিত করবে।

একইসঙ্গে একটি জাতীয় বায়োটেক ডেটা ব্যাংক গঠনের আহ্বান জানান তিনি, যেখানে ক্লিনিক্যাল রেকর্ড থেকে শুরু করে উদ্ভিদ ও প্রাণীর জিনোম তথ্য পর্যন্ত মানসম্মত ডেটা সংরক্ষিত থাকবে।

অনুষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া গ্রুপ বাংলাদেশের সিইও আব্দুল আউয়াল মিন্টু বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বক্তৃতার শেষাংশে সি আর আবরার বলেন, বিজ্ঞানকে ভালো শাসনব্যবস্থা, উদ্ভাবনকে অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিকে প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মিলিয়ে নিতে হবে। তার মতে, এ সম্মেলন শুধু বিজ্ঞানীদের সমাবেশ নয়, বরং সরকার, একাডেমিয়া, শিল্প ও নাগরিক সমাজসহ সব অংশীজনের জন্য একটি আহ্বান।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×