তাপসের সঙ্গে শেখ হাসিনার ফোনালাপ
আমি পোড়াতে বলেছি কী, ওরা পুড়িয়ে দিয়েছে সেতু ভবন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৫:৩১ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে ফোনালাপে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ওপেন নির্দেশনা দিয়েছি। এখন লিথাল ওয়েপন (মারণাস্ত্র) ব্যবহার করবে। যেখানে পাবে সেখানে গুলি করবে। জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমনকে কেন্দ্র করে এমন নির্দেশনার উল্লেখ রয়েছে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই কথোপকথনের অডিও শোনা হয়।
এদিন আন্দোলনকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর হাসান জোহা।
অডিওর একপর্যায়ে শেখ হাসিনাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা জানায় তাপস। উত্তরে তিনি বলেন, বিটিআরসি-বিটিভি পুড়িয়ে দিয়েছে। এখন ইন্টারনেট বন্ধ। মেশিনপত্র সব পুড়ে গেছে। আমি বলছি যা যা পোড়াতে... আমাদের সেতু ভবন পুড়িয়েছে।
এ সময় তাপস জানান, রাতের বেলায় আরও ব্যাপক আক্রমণ চালানো হবে, কারণ তিনি দেখেছেন রাস্তায় বিভিন্ন জায়গায় কার্যক্রম চলছে। শেখ হাসিনা তখন প্রতিত্তোরে বনানী ও গুলশানের নাম উল্লেখ করেন।
পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, ফোনালাপে শেখ হাসিনা নিজেই আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বললাম একটা জিনিস পোড়াতে, যা যা পোড়াতে। ওরা পুড়িয়ে দিলো সেতু ভবন। এর অর্থ, আগুন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তবে তাঁর কাঙ্ক্ষিত স্থাপনা না পোড়িয়ে অন্য স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা তানভীর জোহা জানান, শেখ হাসিনার ৬৯টি অডিও ক্লিপ এবং তিনটি মোবাইল নম্বরের কল রেকর্ড জব্দ করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা। পাশাপাশি সকালে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও উপস্থিত করা হয়, এবং তাঁর সামনে সাক্ষীরা জবানবন্দি প্রদান করেন।