বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে যে সতর্কবার্তা দিল মুডিস
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৭:০৫ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা মুডিস সতর্ক করেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ নবায়নের নতুন নীতি দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রভাব ফেলতে পারে।
মুডিসের মতে, এই নীতির ফলে ব্যাংকের ওপর সাময়িক চাপ কমলেও দীর্ঘমেয়াদে ঋণ আদায় প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে এবং ঝুঁকি বাড়তে পারে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক ১৬ সেপ্টেম্বর নতুন একটি সার্কুলার জারি করে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে নবায়ন করার সুযোগ দিয়েছে। এই ঋণ ১০ বছর মেয়াদে নবায়নযোগ্য, এবং দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ড নির্ধারণ করা হয়েছে। আদালতে মামলা থাকলে নবায়নের পর তা স্থগিত রাখতে হবে।
মুডিসের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এই ধরনের ছাড়ের ফলে সাময়িকভাবে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে ঋণ আদায় ঝুঁকিপূর্ণ হবে। গ্রাহকের প্রকৃত ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা দুই বছরের গ্রেস পিরিয়ডের কারণে যাচাই করা কঠিন হবে। এছাড়া, খেলাপি ঋণ নবায়নের পর ৯০ দিনের মধ্যে মামলা প্রত্যাহার করার বিধানও ঋণ আদায় প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বিশেষ ছাড়ের কারণে কৃত্রিমভাবে খেলাপির প্রবণতা কম দেখা যেতে পারে, কিন্তু বাস্তবে ঝুঁকি কমবে না। বারবার ঋণ নবায়নের ফলে অনাদায়ী ঋণের সংস্কৃতি আরও দৃঢ় হতে পারে, এবং জামানতবিহীন ঋণ কাগজে সচল দেখানো হতে পারে।
মুডিস জানিয়েছে, ২০২৪ সালে দেশের ব্যাংক খাতের অনাদায়ী ঋণের হার মোট বিতরণকৃত ঋণের ১১.১ শতাংশ ছিল। ২০২৫ সালের মার্চে তা বেড়ে ২৪.১ শতাংশে পৌঁছেছে। একই সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর মূলধন মাত্র ৩.১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা নির্ধারিত সীমার চেয়ে অনেক কম।
সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা তিনটি ব্যাংকের ঋণমান নির্ধারণ করেছে — ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংক, যেগুলোর অবস্থান তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল।