কিয়ামতের দিন যে ৫ প্রশ্নের জবাব না দিয়ে কেউ রেহাই পাবে না
- ইসলাম ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৩৮ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২৫

মৃত্যু হলো মানবজীবনের অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতা। ধনী-গরিব, শক্তিশালী-দুর্বল, সবাইকে এটি অবলম্বন করতে হয়। আমাদের এই দুনিয়া শুধুই ক্ষণস্থায়ী, এক পরীক্ষার হলের মতো, যেখানে সফল হলে পরকাল—জান্নাত—হাসিল হবে।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, “জমিনের ওপর যা কিছু আছে আমি সেগুলোর শোভাবর্ধন করেছি, যাতে আমি মানুষকে পরীক্ষা করতে পারি যে, আমলের ক্ষেত্রে কারা উত্তম।” (সুরা কাহাফ : ৭)
সুরাতুল বাকারায় বলা হয়েছে, “যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তাদের সুসংবাদ দাও, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে।” (আয়াত : ২৫)
এছাড়া, সুরা নাহলে উল্লেখ আছে, “নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহূর্তও বিলম্বিত কিংবা ত্বরান্বিত করতে পারবে না।” (আয়াত : ৬১)
মৃত্যুর পর প্রত্যেকের সামনে তার চিরস্থায়ী আবাসস্থল প্রকাশ পায়। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, “মারা যাওয়ার পর মৃত ব্যক্তির সামনে তার মূল বাসস্থান তুলে ধরা হবে। সে যদি জান্নাতি হয়, তবে জান্নাতের, আর যদি জাহান্নামী হয়, তবে জাহান্নামের বাসস্থান দেখানো হবে। পরে বলা হবে, এই তোমার স্থান। অবশেষে আল্লাহ তায়ালা তোমাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করবেন।” (তিরমিজি : ১০৭২)
কিয়ামতের দিনে মানুষের পরিস্থিতি ভয়ংকর হবে। সুরা আবাসায় আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “সেদিন মানুষ নিজের ভাই, নিজের মা, নিজের পিতা, নিজের স্ত্রী ও সন্তানাদি থেকে পালাবে। তাদের মধ্যে প্রত্যেকের ওপর এমন সময় আসবে, সে নিজেকে ছাড়া আর কারও প্রতি লক্ষ্য রাখতে পারবে না।” (সুরা আবাসা : ৩৪-৩৭)
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, মহানবী (সা.) বলেছেন, কিয়ামতের দিন মানুষ উলঙ্গ হয়ে হাশরের ময়দানে দাঁড়াবে। আয়েশার প্রশ্নের উত্তরে হুজুর (সা.) বলেন, “সেদিনের পরিস্থিতি এত ভয়ংকর হবে, কেউ কারও দিকে তাকানোর কথা কল্পনাও করতে পারবে না।” (মুসলিম : ৬৯৩৪)
মহানবী (সা.) আরও উল্লেখ করেছেন, কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে—
১. জীবনকাল সম্পর্কে, কীভাবে তা অতিবাহিত হয়েছে।
২. যৌবনকাল, কী কাজে ব্যয় হয়েছে।
৩. ধন-সম্পদ, কোথা থেকে এসেছে।
৪. ধন-সম্পদের ব্যবহার কীভাবে হয়েছে।
৫. অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী কী কী আমল করা হয়েছে। (তিরমিজি : ২৪১৬)
অতএব, পরকালে সফল হতে হলে পৃথিবীর ক্ষণস্থায়ী জীবনে মহান আল্লাহর হুকুম মেনে চলা এবং রাসুল (সা.) এর আদর্শ ও পথ অনুসরণ করা অত্যাবশ্যক।