
যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে বহুদিনের বিতর্ক আবারও তীব্র হয়ে উঠেছে। ঠিক এমন সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন- এই সাংবিধানিক বিধান মূলত গৃহযুদ্ধ-পরবর্তী সময় দাসদের সন্তানদের সুরক্ষা দিতে তৈরি হয়েছিল, বিদেশি ‘ধনী’ অভিবাসীদের পুরো পরিবারকে নাগরিক বানানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য নয়।
সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে পলিটিকোকে দেওয়া বক্তব্যে রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্প তার নির্বাহী আদেশের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে প্রশাসন পরাজিত হলে সেটি হবে “ধ্বংসাত্মক”।
ট্রাম্প বলেন, “মামলাটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়, কারণ এই মামলাটি ছিল দাসদের সন্তানদের জন্য। আর যদি আপনি মামলার তারিখগুলো দেখেন, তবে এটি স্পষ্টভাবে গৃহযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত।”
তার ভাষায়, ধনী কেউ অন্য দেশ থেকে এসে সামান্য সময় যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেই যেন তার পুরো পরিবার নাগরিক হয়ে যায়- এই বিধান সে উদ্দেশ্যে তৈরি হয়নি।
আরও বলেন, “এই মামলাটি পুরোপুরি দাসত্ব ও দাসদের সন্তানদের বিষয়েই ছিল এবং সে উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছিল, যা ছিল একটি ভালো কারণ।”
ট্রাম্পের দাবি, আদালত এখন বিষয়টি আরও পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছেন এবং জনগণকেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাই যদি এই আইনি লড়াইয়ে প্রশাসন হেরে যায়, তা হবে “একেবারেই ধ্বংসাত্মক”।
জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের সুযোগে “কোটি কোটি মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার সামর্থ্য যুক্তরাষ্ট্রের নেই” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে ঘোষণা দেন-
অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা অভিবাসী বা সাময়িকভাবে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সন্তানরা আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব পাবেন না। এ বিধান আগের জন্মের ক্ষেত্রগুলোকে প্রভাবিত করে না।
এই নীতিগত পরিবর্তনের পরপরই দেশজুড়ে একাধিক মামলা হয়। কয়েকটি ফেডারেল আদালত আদেশটির ওপর অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশও দেন।
জুন মাসে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, ফেডারেল জেলা আদালতগুলোর দেশব্যাপী বা সর্বজনীন স্থগিতাদেশ জারি করার ক্ষমতা নেই।
এরপর ৫ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ আদালত এই আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে এবং বিতর্কের মূলে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেয়।
সবকিছু ঠিক থাকলে আসন্ন গ্রীষ্মেই জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের এই গুরুত্বপূর্ণ মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায় দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।