থাইল্যান্ডের সাবেক রানি সিরিকিত মারা গেছেন


থাইল্যান্ডের সাবেক রানি সিরিকিত মারা গেছেন

থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের মা, প্রাক্তন রানি সিরিকিত আর নেই। ৯৩ বছর বয়সে শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২১ মিনিটে ব্যাংককের একটি হাসপাতালে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন, জানিয়েছে থাই রাজপরিবারের দপ্তর। ২০১৯ সাল থেকে হাসপাতালের নজরদারিতে থাকা রানি সিরিকিত শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন, চলতি মাসে তার রক্তে সংক্রমণও ধরা পড়ে।

রাজপরিবারের ঘোষণা অনুযায়ী, রাজা ভজিরালংকর্ন তার মায়ের রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন। রানি সিরিকিতের মরদেহ ব্যাংককের গ্র্যান্ড প্যালেসের দুসিত থ্রোন হলে সংরক্ষিত থাকবে। পাশাপাশি রাজপরিবারের সদস্যরা এক বছরের শোক পালন করবেন।

রানি সিরিকিত ২০১২ সালে স্ট্রোক করেছিলেন এবং তার পর থেকে জনসমক্ষে খুব কম দেখা যেতো। তিনি এক ছেলে ও তিন মেয়েকে রেখে গেছেন। সিরিকিত দীর্ঘ ৬ দশকের বেশি সময় থাইল্যান্ডের রানি ছিলেন এবং ছিলেন দেশটির দীর্ঘতম সময় সিংহাসনে থাকা রাজার, ভূমিবল আদুলাদেজের স্ত্রী। রাজা ভূমিবলের ২০১৬ সালে মৃত্যু হয় এবং পরে সিংহাসনে বসেন তাদের ছেলে মহা ভাজিরালংকর্ন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, প্রয়াত মায়ের জন্য থাই রয়্যাল হাউসহোল্ড ব্যুরোকে রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রানি সিরিকিতের দেহ ব্যাংককের রাজপ্রাসাদের দুসিত থ্রোন হলে সমাহিত করা হবে।

রানি সিরিকিতের মৃত্যুতে থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তার মালয়েশিয়া সফর বাতিল করেছেন। তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে কুয়ালালামপুর যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

সিরিকিতের জন্ম ও শিক্ষাজীবনেও ছিল আন্তর্জাতিক প্রভাব। তার বাবা ছিলেন ফ্রান্সে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত এবং সিরিকিত নিজেও প্যারিসে শিক্ষালাভ করেছিলেন। সেখানেই তার পরিচয় হয় রাজা ভূমিবলের সঙ্গে। তিনি ছিলেন ভূমিবলের স্ত্রী, যিনি ২০১৬ সালে মারা যান। ফ্রান্সে সঙ্গীতে পড়াশোনা করার সময়ই সিরিকিত ও ভূমিবলের প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে। ১৯৮০ সালে বিবিসির প্রামাণ্যচিত্র ‘সোল অব আ নেশন’-এ তিনি থাই রাজতন্ত্র সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘প্রথম দেখাতেই ঘৃণা জন্মেছিল’।

বিবিসি জানিয়েছে, থাই জনগণের কাছে সিরিকিত একটি গুরুত্বপূর্ণ মাতৃসুলভ চরিত্র হিসেবে বিবেচিত হতেন। ১৯৭৬ সাল থেকে তার জন্মদিন ১২ আগস্ট থাইলে মা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ২০০৮ সালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত এক সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতেও তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×