আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের পরিস্থিতি যথাযথ গুরুত্ব পায়নি


আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের পরিস্থিতি যথাযথ গুরুত্ব পায়নি

গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে যুদ্ধকালীন সময়ে ইসরায়েল হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে আটক করেছে। তবে বন্দিদের মুক্তির পর তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ অপেক্ষাকৃত কম। অন্যদিকে, কিছু সংখ্যক ইসরায়েলি বন্দি নিয়ে পশ্চিমা মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া দেখা গেছে।

লন্ডনে অবস্থানরত কাউন্সিল ফর আরব-ব্রিটিশ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (CAABU) এর পরিচালক ক্রিস ডয়েল শনিবার (১৮ অক্টোবর) আল জাজিরার সঙ্গে আলাপে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “ইসরায়েলি বন্দিদের প্রতি আন্তর্জাতিক মনোযোগ বোঝা যায়, তবে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির সময় যে পরিস্থিতি তারা ভোগে, তা নিয়ে কোনো খবর পাওয়া যায় না।” ডয়েল আরও উল্লেখ করেন, “তাদের কোথায় রাখা হয়েছিল? নির্যাতন, এমনকি যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলো খুবই অবমূল্যায়িত হচ্ছে।”

ক্রিস ডয়েল বলেন, এই বিষয়গুলো ফিলিস্তিনিদের জন্য বাস্তব ও বেদনাদায়ক। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ অন্যান্য অঞ্চলের মিডিয়া এবং রাজনৈতিক আলোচনায় ইসরায়েলি বন্দিদের প্রতি অধিক মনোযোগ দেয়া হয়, কিন্তু ফিলিস্তিনি বন্দিদের দুরবস্থার প্রতি তেমন গুরুত্ব দেয়া হয় না।

ডয়েল আরো যোগ করেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের ২০-দফা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় ইসরায়েলের জবাবদিহিতার বিষয়টি বাদ দেয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, “সব দোষারোপের জন্য যাদের দায়িত্ব নির্ধারণের জন্য একটি ব্যবস্থা থাকা জরুরি, কিন্তু ২০-দফা চুক্তিতে এ ধরনের কোনো বিধান নেই। যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েল কোনো বিচারিক প্রক্রিয়াকে অনুমোদন করবে না, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।”

গত দুই বছরের দীর্ঘ সংঘাত শেষে মার্কিন সমর্থিত এক যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে স্থিতিশীলতা আসে। তবে এই সংঘাতকালে ইসরায়েলি হামলায় ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে রয়েছেন।

চলতি বছরের শুরুতেই এক যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ইসরায়েল ২৭ মে থেকে গাজায় পৃথকভাবে সাহায্য বিতরণ শুরু করে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পায়। তবে এর পরবর্তী সময়ে গাজায় দুর্ভিক্ষ মারাত্মক রূপ ধারণ করে।

খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো থাকা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালায়, যার ফলে শতাধিক মানুষ নিহত হয়। পাশাপাশি দুর্ভিক্ষের কারণে শিশুসহ অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গাজা উপত্যকায় সংঘটিত যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি রয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×