ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসছেন শেহবাজ ও আসিম মুনির
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০১:১৮ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের মধ্যে ২৫ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। সাম্প্রতিক বাণিজ্য চুক্তির পর এই বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং বৈশ্বিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তারা।
ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা, অর্থনীতি ও বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় আসবে। কয়েক সপ্তাহ আগেই যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তান একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছায়, যার আওতায় পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। অন্যদিকে, ভারতের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি এখনো হয়নি।
জিও নিউজের তথ্য অনুযায়ী, বৈঠকে অংশ নিতে পারেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। দ্য ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেনাপ্রধানের, যিনি এর আগেও বছরের শুরুতে হোয়াইট হাউসে প্রথমবারের মতো একজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের আমন্ত্রণ পান। সে সময় ওই বৈঠকে কোনো বেসামরিক শীর্ষ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না, যা ছিল অভূতপূর্ব।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান, “এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এগিয়ে নিতে মনোযোগী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আর এর অংশ হিসেবে পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন তিনি।” তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব - সবকিছুই আলোচনার অংশ।
ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে ওই কর্মকর্তা জানান, ট্রাম্প সম্পর্কের টানাপোড়েন নিয়ে খোলাখুলি হতাশা প্রকাশ করলেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখে। এসময় তিনি কোয়াড সম্মেলনের পরিকল্পনার কথাও জানান, যা অস্ট্রেলিয়া, ভারত, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে গঠিত একটি কৌশলগত ফোরাম। নভেম্বরে ভারত এই সম্মেলন আয়োজন করতে না পারলে, আগামী বছরের শুরুতে তা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ইসলামাবাদে ট্রাম্পের মধ্যস্থতামূলক প্রচেষ্টার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি গাজায় ইসরায়েলের হামলা, কাতার ও ইরানকে লক্ষ্য করে পরিচালিত সাম্প্রতিক অভিযানের তীব্র সমালোচনা করেছে ইসলামাবাদ।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বেশ কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর আলোচনা হয় এবং ট্রাম্পের প্রশাসন যুদ্ধবিরতি নিয়ে একটি শান্তি প্রস্তাবও ওই দেশগুলোর কাছে উপস্থাপন করে।
বিশ্লেষকদের মতে, হোয়াইট হাউসের এই বৈঠক যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের নতুন মোড় হতে পারে, যেখানে ভূরাজনৈতিক ভারসাম্য, সামরিক কৌশল ও বাণিজ্যিক স্বার্থ একসঙ্গে বিবেচনায় আসছে।