অবিরাম বৃষ্টিতে অচল দিল্লি, নদীর পানি ঘরবাড়ি ও সড়কে প্রবেশ করছে


অবিরাম বৃষ্টিতে অচল দিল্লি, নদীর পানি ঘরবাড়ি ও সড়কে প্রবেশ করছে

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে অবিরাম বৃষ্টিপাতের কারণে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর উঠে গেছে। এতে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, রাস্তা ও ত্রাণকেন্দ্রগুলো। নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে শত শত মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যমুনার পানি বেড়ে ময়ুর বিহার ফেজ-১ সহ নিম্নাঞ্চলের ত্রাণকেন্দ্রগুলো প্লাবিত হয়েছে।

সরকারি তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় দিল্লির পুরোনো রেল সেতুতে যমুনার পানি ছিল ২০৭.৪৮ মিটার। রাত ২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত একই মাত্রায় থাকলেও সকাল থেকে তা কিছুটা বেড়েছে।

অবিরাম বর্ষণের প্রভাবে দিল্লিতে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আলিপুর এলাকায় সড়কের একাংশ ধসে পড়েছে। সিভিল লাইনস এলাকায় গাড়ি পানিতে ডুবে গেছে এবং ভবন প্লাবিত হয়েছে। কাশ্মিরি গেট এলাকায়ও পানি ঢুকে পড়েছে।

বুধবার বিকেলে দিল্লি ও এনসিআর জুড়ে ব্যাপক যানজট ও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। নদীর পানির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে তীরবর্তী এলাকায়, যেখানে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ির পাশাপাশি ত্রাণকেন্দ্রগুলোও ডুবে গেছে।

লোহাপুল এলাকা থেকে প্রাপ্ত ছবিতে দেখা যায়, বন্যার পানি বাঁধ উপচে ত্রাণকেন্দ্রে ঢুকে পড়েছে। এনডিআরএফ ও স্থানীয় প্রশাসন যমুনা বাজার ও যমুনা খাদা থেকে বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।

জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ) এক্স-এ (সাবেক টুইটার) জানায়, “যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপরে যাওয়ায় যমুনা বাজার, নাজাফগড় ও জইতপুরে উদ্ধার অভিযান চালানো হয়েছে।” এতে ৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৬২৬ জন মানুষ ও ১৩টি গবাদিপশু।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিন বজ্রঝড় ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, ৫ ও ৬ সেপ্টেম্বর মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, হরিয়ানার পানিপথ, সোনিপথ, গুরগাঁও, ফারিদাবাদ, পালওয়াল ও মেওয়াটে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ঘণ্টায় ১৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং জম্মু-কাশ্মীরসহ আরও কয়েকটি অঞ্চলে অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি হয়েছে।

এদিকে পাঞ্জাবে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বুধবার পর্যন্ত রাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। ২৩টি জেলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ১৯৮৮ সালের পর এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি। রূপনগর ও পাটিয়ালা জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×