ইসরায়েলি হামলায় হুথি প্রধানমন্ত্রী রাহাভি নিহত

ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি অ্যাপার্টমেন্টে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীদের প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাভি নিহত হয়েছেন বলে শনিবার আল-জুমহুরিয়া টেলিভিশন জানিয়েছে। আদেন আল-গাদ পত্রিকার তথ্যে বলা হয়েছে, রাহাভির সঙ্গে তার একাধিক সহযোগীও প্রাণ হারিয়েছেন।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই হামলাটি ছিল সানার বাইরে হুথি সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রীসহ প্রায় ১০ জন শীর্ষ মন্ত্রীর ওপর চালানো আরেকটি আক্রমণের বাইরে একটি আলাদা অভিযান। ওই বৈঠকে হুথি নেতা আবদুল মালিক আল-হুথির ভাষণ শোনার কথা ছিল। তবে সেই হামলার ফলাফল এখনো পরিষ্কার নয়।

ইসরায়েলি চ্যানেল ‘কান’ জানিয়েছে, রাহাভি এক বছর ধরে হুথি সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, যদিও তিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাননি। অন্যদিকে এন টুয়েলভের খবরে বলা হয়, তিনি ইরান ও হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন এবং সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণের অনুমোদন দিয়েছিলেন।

আরব গণমাধ্যম জানায়, সানায় প্রায় ১০টি পৃথক হামলা চালানো হয়েছে। ইয়েমেনি সূত্রের বরাতে ‘কান’ আরও জানায়, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ভেতরেও হামলা চালিয়ে হুথি সরকারের কয়েকজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেনাবাহিনী সানায় হুথি শাসন ও সামরিক কাঠামোর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ ও সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামির এই হামলার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরো অভিযান অনুসরণ করেন।

এই হামলার আগে বৃহস্পতিবার হুথিরা ইসরায়েলের দিকে দুটি ড্রোন ছোড়ে, যা আইডিএফ ভূপাতিত করে। এছাড়া রোববার সানায় একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ও বিদ্যুৎকেন্দ্রেও ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী কাটজ সতর্ক করে বলেন, “অন্ধকারের পর আঘাত আসে প্রথম সন্তানদের ওপর। যে কেউ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হাত তুলবে, তার হাত কেটে ফেলা হবে।”

২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর থেকে হুথিরা ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন নিক্ষেপ করে আসছে। তবে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত এসব হামলায় ইসরায়েলে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। একইসঙ্গে, ইসরায়েলি পাল্টা হামলাও এখনো পর্যন্ত হুথিদের আক্রমণ পুরোপুরি ঠেকাতে সক্ষম হয়নি।