ইসরায়েল ইস্যুতে আইসিসির বিচারক-প্রসিকিউটরে বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:০৪ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২৫

ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলায় পদক্ষেপ নেওয়ায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) দুই বিচারক ও দুই প্রসিকিউটরের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে আইসিসির ওপর চাপ প্রয়োগের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। এতে জানানো হয়, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন ফরাসি বিচারক নিকোলাস ইয়ান গুইলু, ফিজির প্রসিকিউটর নাজহাত শামীম খান, সেনেগালের মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং এবং কানাডার কিম্বারলি প্রোস্ট।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র দপ্তরের ঘোষণায় নিশ্চিত করা হয়, এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে গাজা যুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আইসিসি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত এবং হামাস নেতা ইব্রাহিম আল-মাসরির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।
আইসিসির প্রাক-বিচার প্যানেলের বিচারক নিকোলাস ইয়ান গুইলুই নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ সময় প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন নাজহাত শামীম খান ও মামে মানদিয়ায়ে নিয়াং।
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয় ধাপের পদক্ষেপ। প্রায় তিন মাস আগে একইভাবে আইসিসির আরও চার বিচারকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তখন ওয়াশিংটন জানিয়েছিল, ওই বিচারকরা আদালতের ‘‘অবৈধ ও ভিত্তিহীন পদক্ষেপে’’ যুক্ত ছিলেন, যা সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরায়েলকে টার্গেট করেছে।
গত জুনে ওয়াশিংটনের এই আচরণের কড়া সমালোচনা করে আইসিসি বলেছিল, এ ধরনের পদক্ষেপ আদালতের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা। তবে বুধবারের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত আইসিসি গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচার করার এখতিয়ার রাখে—যদি ঘটনাটি কোনো সদস্য রাষ্ট্রে ঘটে অথবা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ থেকে রেফার করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইসরায়েল এই আদালতের সদস্য নয়।
বর্তমানে আইসিসি উচ্চপর্যায়ের একাধিক তদন্ত পরিচালনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ, রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন, সুদান, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, ভেনেজুয়েলা ও আফগানিস্তানের মামলা। সর্বশেষ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে সংশ্লিষ্ট বিচারক ও প্রসিকিউটরের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা যেকোনো সম্পদ জব্দ হবে এবং তারা মার্কিন আর্থিক ব্যবস্থার বাইরে চলে যাবেন।
সূত্র: রয়টার্স