অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে সন্তান কোলে নিয়েই ভাষণ দিলেন নারী সিনেটর
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৭:৩৮ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৫

সংসদের ইতিহাসে অনন্য এক মুহূর্ত—সন্তানকে কোলে নিয়েই প্রথমবারের মতো ভাষণ দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার নতুন নারী সিনেটর করিন মুলহল্যান্ড।
মাত্র কয়েক মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে সংসদে হাজির হয়ে নিজের প্রথম বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির নবনির্বাচিত এই সিনেটর। কুইন্সল্যান্ড রাজ্য থেকে নির্বাচিত করিন মুলহল্যান্ড যখন সংসদীয় ভাষণে অংশ নিচ্ছিলেন, তখন তার ছোট্ট ছেলে কোলে বসে সাড়া দিচ্ছিল সুর করে কথা বলার চেষ্টা করে। এই হৃদয়ছোঁয়া দৃশ্যের ভিডিও সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সংসদের ভেতর সন্তানকে বুকে চেপে রেখে বক্তব্য দিচ্ছেন করিন। ছোট্ট শিশুটি মাঝেমধ্যে হাত-পা ছুড়ে বিরক্তি প্রকাশ করছিল, আর পেছন থেকে এক সংসদ সদস্য তাকে শান্ত রাখতে হাসিমুখে নানা অঙ্গভঙ্গি করছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাতে, অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে অবস্থিত সংসদে।
বক্তব্যে করিন তুলে ধরেন অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মা-বাবার বাস্তবতা ও অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, "আমার সন্তান এখানে কোনো প্রতীক হিসেবে নয় বরং এটি একটি শক্তিশালী স্মারক। আমি কেন এখানে আছি, তারই প্রতিফলন আমার সন্তান। আমি একজন স্ত্রী, একজন মা, কুইন্সল্যান্ডের প্রান্তিক শহরতলীর একজন নাগরিক।"
তিনি আরও বলেন, "মা-বাবারা কেবল তত্ত্বগতভাবে নয়, বাস্তব জীবনেও এই সংসদীয় চেম্বারে থাকার অধিকার রাখে। শিশু লালন-পালনের সংগ্রাম, দায়িত্ববোধ ও তার মাঝেই থাকা এক ধরণের ‘টান’ ও মাতৃত্বের বিশালত্বসহ সব অভিজ্ঞতা কাজে লাগে।"
করিন জানান, কর্মজীবী মা-বাবাদের মতো তাকেও বারবার কাজ ও পারিবারিক দায়িত্বের ভারসাম্য রক্ষা করতে হয়েছে। সংসদের ভেতরে যে সহনশীলতা তৈরি হয়েছে, তা বহু বছরের সংগ্রামের ফল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার কথায়, এখন সময় এসেছে সংসদের বাইরেও কর্মক্ষেত্রে এমন আধুনিক ও নমনীয় পরিবেশ নিশ্চিত করার।
বক্তব্যে করিন প্রতিশ্রুতি দেন কর্মজীবী পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর। তিনি বলেন, "আমি চাই পরিবারগুলো যেন কখন, কোথায় এবং কীভাবে তারা কাজ করবে সে বিষয়ে বাস্তব ও কার্যকর পছন্দ এবং নমনীয়তা পায়।"
ভাষণের শেষভাগে করিন এবং তার ছোট সন্তান নির্বিঘ্নে বক্তব্য শেষ করতে সক্ষম হন। এরপর সংসদের একাধিক সদস্য শিশুটিকে কোলে তুলে নিয়ে আদর করে, যা ছিল এক আবেগঘন ও সহানুভূতিশীল মুহূর্ত।
সূত্র: উইওন