সংঘর্ষে উত্তপ্ত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্ত: যুদ্ধের শঙ্কা প্রধানমন্ত্রীর
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:২৫ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২৫

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে বেড়ে চলা সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই। তিনি জানিয়েছেন, দুই দেশের চলমান সংঘর্ষ দ্রুত নিয়ন্ত্রণে না এলে তা ‘সম্পূর্ণ যুদ্ধের’ রূপ নিতে পারে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সন্ধ্যায় তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী হিসেবে সমঝোতার চেষ্টা করেছি, তবে জরুরি পরিস্থিতিতে থাই সেনাবাহিনীকে এখন তৎপর হতে বলা হয়েছে। যদি পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়, তাহলে এটি যুদ্ধেও রূপ নিতে পারে।’
থাই সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা শুরু হয়, যা পরবর্তীতে ব্যাপক রূপ নেয়। সংঘর্ষে অংশ নেয় ফাইটার জেট, কামান, ট্যাংক এবং পদাতিক বাহিনীও। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আজ এক জরুরি বৈঠকে বসছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় থাই সেনাবাহিনীর এক কমান্ডার কম্বোডিয়ার সীমান্তসংলগ্ন আটটি জেলায় সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন। ওই কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, কম্বোডিয়ার বাহিনী ‘থাই ভূখণ্ডে জোরপূর্বক প্রবেশ’ করেছে।
বেশিরভাগ হতাহত থাই নাগরিক
সংঘর্ষের ভয়াবহতা তুলে ধরে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, এটি গত এক দশকের মধ্যে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী লড়াই। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের অধিকাংশই থাই নাগরিক।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিকোরন্দেজ বালানকুরা রয়টার্সকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং মালয়েশিয়া এ সংকট নিরসনে সংলাপের আয়োজন করতে চেয়েছে। তবে ব্যাংকক দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ওপরই জোর দিচ্ছে এবং ‘তৃতীয় পক্ষের’ মধ্যস্থতায় অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে।
কম্বোডিয়ার অভিযোগ ও চীনের প্রতিক্রিয়া
এদিকে, কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত বলেছেন, থাইল্যান্ড একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব থেকে ‘পিছিয়ে গেছে’ এবং এখন তার দেশ ‘সত্যিকারের সদিচ্ছার’ প্রতীক্ষায় রয়েছে।
চীনও এই সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি বেদনাদায়ক’ এবং এই পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রয়োজন।
দুই দেশের এই উত্তেজনা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রশ্নে। কূটনৈতিক মহল নজর রাখছে আজকের জাতিসংঘ বৈঠকের দিকে, যেখানে হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত আসতে পারে।