ভারত আবার চালু করলো চীনা নাগরিকদের পর্যটক ভিসা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৫৪ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২৫

দীর্ঘ পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর অবশেষে চীনা পর্যটকদের জন্য আবারও পর্যটক ভিসা চালু করছে ভারত। নয়াদিল্লির এই সিদ্ধান্ত দুই প্রতিবেশীর মাঝে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বুধবার দিল্লিতে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৪ জুলাই থেকে চীনা নাগরিকদের জন্য ভারতীয় ভিসা আবার ইস্যু করা শুরু হবে।
ভারত-চীনের মধ্যে ২০২০ সালে হিমালয় সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সম্পর্ক চরম উত্তেজনায় পৌঁছে যায়। সেই ঘটনার জের ধরে ভারত চীনা বিনিয়োগে বিধিনিষেধ আরোপ করে, বিপুল সংখ্যক জনপ্রিয় চীনা মোবাইল অ্যাপ নিষিদ্ধ করে এবং যাত্রী পরিবহন রুট বন্ধ করে দেয়।
অন্যদিকে, কোভিড-১৯ মহামারির সময় চীনও বিদেশিদের, বিশেষ করে ভারতীয়দের জন্য ভিসা দেওয়া স্থগিত করে। পরবর্তীতে ২০২২ সালে চীন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের জন্য আবার ভিসা চালু করলেও, ভারতীয় পর্যটকদের ক্ষেত্রে সেই নিষেধাজ্ঞা চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বহাল রাখে।
এ বছরের শুরুতে দুই দেশ ফের যাত্রী পরিবহনের জন্য আকাশপথ চালুর বিষয়ে একমত হয়।
সম্প্রতি উচ্চ পর্যায়ের একাধিক কূটনৈতিক বৈঠকের পর ভারত ও চীনের সম্পর্কে ধীরে ধীরে ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরে রাশিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাঝে সরাসরি বৈঠক হয়, যা দুই দেশের সম্পর্কে উত্তাপ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন বুধবার বলেন, “পর্যটক ভিসা চালুর ভারতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় বেইজিং। ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ও দ্বিপাক্ষিক পরামর্শের মাধ্যমে সম্পর্ক উন্নয়নে চীন আগ্রহী।”
ভারত ও চীনের মধ্যে প্রায় ৩,৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। দুই দেশের সৈন্যরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর দীর্ঘদিন ধরে একটি নির্দিষ্ট প্রোটোকল মেনে চলে, যার আওতায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকে। তবু সীমান্ত এলাকাগুলোতে প্রায়শই সংঘাতের ঘটনা ঘটে।
১৯৬২ সালে চীন ও ভারতের মধ্যে ভয়াবহ সীমান্ত যুদ্ধ হয়েছিল, যার রেশ এখনো কাটেনি। চলতি জুলাই মাসে বেইজিং সফরকালে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর তাঁর চীনা সমকক্ষকে জানান, “সীমান্ত উত্তেজনা কমিয়ে, সেনা প্রত্যাহার নিশ্চিত করে এবং নিষেধাজ্ঞামূলক অর্থনৈতিক পদক্ষেপ এড়িয়ে দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হবে।”