পদত্যাগ করতে পারেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:২৯ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২৫
.jpg)
জাপানের রাজনীতিতে বড় ধরনের অস্থিরতা আসতে পারে—এমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে একাধিক সূত্র। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা শিগগিরই পদত্যাগ করতে পারেন বলে জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিক পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ নির্বাচনে তার নেতৃত্বাধীন দলের ভরাডুবির পর এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন তিনি।
বুধবার (২৩ জুলাই) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইশিবা আগামী মাসেই দায়িত্ব ছাড়তে পারেন। তার ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, উচ্চকক্ষে নির্বাচনে বড় পরাজয়ের পর থেকেই পদত্যাগ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন তিনি।
তবে ইশিবার পদত্যাগের পরপরই সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছে একই সূত্র। বরং, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পর কিছু সময় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখাই অগ্রাধিকার হবে।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী ইশিবা সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা দিয়েছেন। এর আওতায় জাপানি গাড়ি আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা হবে এবং দেশটি অন্যান্য পণ্যে মার্কিন কড়াকড়ি শুল্কের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
ইশিবার ঘনিষ্ঠ সূত্রটি আরও জানিয়েছে, “ইশিবা যদি নির্বাচনের ঠিক পরপরই পদত্যাগ করতেন, তবে তা দেশজুড়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা তৈরি করত। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির নির্ধারিত সময়সীমা ১ আগস্টের আগে এটি ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে তিনি আগে চুক্তিটি নিশ্চিত করে পদত্যাগের সময় ঠিক করেছেন।” ধারণা করা হচ্ছে, তার আনুষ্ঠানিক পদত্যাগ ঘোষণা আগামী মাসেই আসবে।
রয়টার্স জানায়, ক্ষমতায় আসার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যেই ইশিবার এই সম্ভাব্য পদত্যাগ লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দলটিকে এখন নতুন নেতৃত্ব খুঁজে নিতে হবে।
এদিকে, এবারের নির্বাচনে এলডিপির জনপ্রিয়তায় বড় ধরনের ধস নেমেছে, যার পেছনে নতুন কিছু ডানপন্থি রাজনৈতিক দলের উত্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। “জাপান ফার্স্ট” স্লোগানকে সামনে রেখে আত্মপ্রকাশকারী সানসেইতো পার্টি এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। মাত্র এক আসন থেকে বেড়ে তারা ১৪টি আসন লাভ করেছে। অভিবাসন কমানো, কর হ্রাস এবং মূল্যস্ফীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারা ভোটারদের মন জয় করে।
উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর দলীয় নেতৃত্বের লড়াইয়ে কট্টর রক্ষণশীল প্রার্থী সানায়ে তাকাইচিকে পরাজিত করে ইশিবা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু অক্টোবরের সাধারণ নির্বাচনে এলডিপি নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়, ফলে তার উত্তরসূরিকে সংসদের উভয় কক্ষেই সংখ্যালঘু অবস্থায় সরকার চালাতে হবে।
রয়টার্সে প্রকাশিত তথ্যমতে, নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পর সঙ্গে সঙ্গেই সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবেন না। পরিবর্তে, তিনি প্রথমে অন্যান্য বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের সমর্থন নিশ্চিত করতে চাইবেন, যাতে পার্লামেন্টে তার নিয়োগ নিশ্চিত হয়।
পরে তিনি দলকে আরও সংগঠিত করে জনগণের আস্থা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনের পথে অগ্রসর হবেন।