বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন
ইলন মাস্কের ‘আমেরিকা পার্টি’ রিপাবলিকানদের জন্য হুমকি হতে পারে
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০২:৪৮ পিএম, ০৮ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক উদ্যোগ ‘আমেরিকা পার্টি’কে তুচ্ছ করে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি আগামী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে এমন সময়, যখন কংগ্রেসে তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা খুবই সঙ্কটাপন্ন।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি মাস্ক ‘আমেরিকা পার্টি’ চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। এই উদ্যোগ আসে ট্রাম্পের একটি বাজেট-সংক্রান্ত বিল অনুমোদনের পরপরই, যেটিকে মাস্ক কঠোরভাবে সমালোচনা করে বাজেট ঘাটতি বাড়ানোর অভিযোগ তোলেন। যদিও মাস্ক এখনো তার দলের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রকাশ করেননি, তবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি ২০২৬ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের কিছু আসনে প্রভাব ফেলতে চান—বিশেষ করে যেসব রিপাবলিকান বাজেট সংযমের কথা বলেও ট্রাম্পের বিলকে সমর্থন করেছেন।
সাবেক রিপাবলিকান প্রার্থী এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক ম্যাট শুমেকার বলেন, মাস্কের নতুন দল রিপাবলিকানদের জন্য একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝুঁকি তৈরি করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “তাদের আসন সংখ্যা খুবই সীমিত, তাই মাস্কের দল এ অবস্থানে চাপ ফেলতে পারে।”
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন, ইলন মাস্কের বিপুল সম্পদ ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা তাকে অন্য যেকোনো তৃতীয় রাজনৈতিক দল থেকে আলাদা করে তুলেছে। জুন মাসে করা মাস্কের একটি অনলাইন জরিপে ৫৬ লাখ অংশগ্রহণকারীর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই তার দলকে সমর্থন জানিয়েছে।
শুমেকার বলেন, “মাস্কের পরিচিতি প্রযুক্তিপ্রেমী এবং তরুণ ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্য, যাদের একটি বড় অংশ পূর্বে রিপাবলিকানদের দিকে ঝুঁকতেন।”
তবে জনপ্রিয়তার দিক থেকে এখনো ট্রাম্পের চেয়ে পিছিয়ে আছেন মাস্ক। Nate Silver পরিচালিত সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, মাস্কের নেট ফেভারেবিলিটি স্কোর মাইনাস ১৮.১, যেখানে ট্রাম্পের স্কোর মাইনাস ৬.৬।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও মাস্ক রাজনীতিতে বড় বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারণায় তিনি ২৭৭ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন। তবে উইসকনসিনের একটি স্থানীয় নির্বাচনে ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেও তার সমর্থিত প্রার্থীর পরাজয় ইঙ্গিত দেয় যে, অর্থ বা খ্যাতি সবসময় জয়ের নিশ্চয়তা দেয় না।
ওয়াশিংটন কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ফ্লাভিও হিকেল বলেন, “রিপাবলিকান ঘাঁটি এবং MAGA আন্দোলন এখন একত্রিত হয়ে গেছে। তাই মাস্কের নতুন উদ্যোগ সেই ঘাঁটি থেকে ভোট কেড়ে নিতে পারবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, মাস্কের দল হয়তো সরাসরি কোনো আসন জিততে পারবে না, কিন্তু নির্বাচনে রিপাবলিকানদের ভোট ভাগ করে দিয়ে ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। গ্লোবাল ক্রাইসিস পিআর প্রতিষ্ঠান রেড বানিয়ানের প্রধান ইভান নায়ারম্যান বলেন, “কিছু গুরুত্বপূর্ণ আসনে অল্প ভোট কেটে নিলেই রিপাবলিকানদের কংগ্রেস নিয়ন্ত্রণ হারানোর শঙ্কা তৈরি হতে পারে।”