জনগণ পাশে থাকলে দিল্লি পালাতে হয় না, লন্ডন থাকতে হয় না: হাসনাত


February 4 2025/hasnat_20250708_212901072.jpg

ক্ষমতা কোনো ব্যবসায়ী, বিদেশি শক্তি কিংবা অভিজাত গোষ্ঠীর নয়—ক্ষমতার প্রকৃত উৎস জনগণ, এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, ‘জনগণ পাশে থাকলে দিল্লি পালাতে হয় না, লন্ডন যেতে হয় না।’

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে মেহেরপুরের গাংনী পৌর শহরের বাসস্ট্যান্ডে এনসিপি আয়োজিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ উপলক্ষে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি। এ সময় তিনি জনগণের ওপর বিশ্বাস রেখে রাজনীতি করার আহ্বান জানান এবং ভোটারদের সচেতন থাকার পরামর্শ দেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ক্ষমতার উৎস দিল্লি নয়, বসুন্ধরা গ্রুপ নয়, এস আলম নয়—ক্ষমতার উৎস জনগণ। জনগণ যদি পাশে থাকে, তাহলে এই ৫৬ হাজার বর্গমাইলেই জন্ম ও মৃত্যু হয়। আমাদের কারো পিণ্ডি, দিল্লি কিংবা আমেরিকার ওপর নির্ভর করার প্রয়োজন নেই।’

নেতৃত্ব নির্বাচনে যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যিনি জনগণের কাছে যান, তাদের ভাষা ও সমস্যা বোঝেন—তিনিই প্রকৃত নেতা। অথচ আমাদের দেশে নির্বাচনের আগে হঠাৎ নেতা তৈরি হয়। বস্তায় বস্তায় টাকা এনে ভোট কেনেন, পুলিশ ও এজেন্ট কিনে নেন, থানার ওসি ও জেলার এসপিকেও কিনে ফেলেন। এখন সময় এসেছে এসবের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যে নেতা আপনাকে টাকা দেবেন, পরে তিনিই আপনাদের ওপর কর্তৃত্ব ফলাবেন। তিনি একদিনের জন্য টাকা দেবেন, আর পাঁচ বছর আপনাদের দিয়ে গোলামি করাবেন।’

রাজনীতিকে ব্যবসায়ীদের প্রভাবমুক্ত রাখার অঙ্গীকার জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা আমাদের রাজনীতি কোনো ব্যবসায়ীর কাছে বন্ধক দিইনি। আমরা জনগণের কাছ থেকে ১০, ২০ বা ১০০ টাকা করে অর্থ সংগ্রহ করব, সেই অর্থ দিয়েই রাজনীতি করব। কারণ রাজনীতি যদি ব্যবসায়ীদের টাকায় চলে, তাহলে তাঁদের স্বার্থে নীতি তৈরি করতে হয়।’

তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আগের প্রজন্ম ভণ্ডামিকে বলেছে কৌশল, আর মিথ্যাকে বলেছে রাজনীতি। এখন সময় এসেছে সত্য ও সাহসের ভিত্তিতে নতুন রাজনীতি গড়ার।’

পথসভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে এই মেহেরপুর থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হয়নি। মুজিববাদী সংবিধানের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চাপা দেওয়া হয়েছিল।’

তিনি জানান, ‘২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান একটি নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছে। আমরা চাই মেহেরপুর থেকেই নতুন ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ তৈরি হোক, যা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের রূপরেখা নির্ধারণ করবে।’

পথসভা ও পদযাত্রায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব মাহিন সরকার এবং জেলা এনসিপির যুগ্ম সম্পাদক সাকিল আহম্মেদ প্রমুখ।

পদযাত্রাটি সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় মেহেরপুর শহীদ শামসুজ্জোহা পার্ক থেকে শুরু হয়ে সরকারি কলেজ মোড়ে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×