গাজায় ত্রাণ বিতরণ যেন এক ভয়াবহ মৃত্যুর ফাঁদ, চার সপ্তাহে নিহত ৫৪৯
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৫৭ পিএম, ২৬ জুন ২০২৫

গাজা উপত্যকায় ত্রাণ বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে গত চার সপ্তাহে ত্রাণ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৫৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৬ মে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তাদের খোলা চারটি ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলি বাহিনীর এই ‘মৃত্যুর ফাঁদে’ এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও ৩৯ জন এখনো নিখোঁজ হয়েছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই তথাকথিত “ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে” যা ঘটছে তা একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধাপরাধ, যার জন্য ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রাথমিক এবং প্রত্যক্ষভাবে দায়ী। আমরা এই চলমান অপরাধের তীব্র নিন্দা জানাই, যেখানে ক্ষুধার্ত বেসামরিক নাগরিকদের প্রলুব্ধ করা হয় এবং তারপর পূর্ব-নির্ধারিত সময়সূচী অনুসারে প্রতিদিন নিয়মতান্ত্রিকভাবে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।’
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস আরও জানিয়েছে, ‘দখলদাররা খাদ্যকে গণহত্যার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে, যাকে তারা “সহায়তা” বলে দাবি করে কিন্তু ধ্বংস ও আধিপত্য বিস্তারের হাতিয়ারে পরিণত করছে।’
প্রসঙ্গত, ১১ সপ্তাহ ধরে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে অবরোধের পর আন্তর্জাতিক চাপে গত ২৬ মে জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় জিএইচএফ— ত্রাণ বিতরণ সংস্থা খোলার ঘোষণা দেয় ইসরায়েলি।
জাতিসংঘসহ অন্যান্য খাদ্য সংস্থা জিএইচএফর এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা বলছে, এই উদ্যোগ মানবিক নীতিমালা লঙ্ঘন করে এবং ত্রাণকে রাজনৈতিক ও সামরিক লক্ষ্য অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে।
তারা সতর্ক করে বলেছে, এই ত্রাণ কার্যক্রম শারীরিকভাবে দুর্বলদের পিছে ঠেলে দেবে এবং মানুষকে বাস্তুচ্যুত করবে, বিপদের মুখে ফেলবে এবং বৈশ্বিকভাবে ত্রাণ বিতরণের জন্য একটি খারাপ নজির তৈরি করবে।
ইসরায়েল অবশ্য বলছে, হামাস যাতে ত্রাণ চুরি না করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতেই বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। যদিও ইসরায়েলের এই চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছে হামাস।
সূত্র: আলজাজিরা