ফারুকীর প্রত্যাশা ছিল নতুন বাংলাদেশ, শান্তি চেয়েছিলেন পরীমণি
- বিনোদন ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৪১ এম, ০৫ আগস্ট ২০২৫

আজ ৫ আগস্ট, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক স্মরণীয় দিন। ঠিক এক বছর আগে, ২০২৪ সালের এই দিনে ছাত্র-জনতার দীর্ঘ আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এক মাসেরও বেশি সময়জুড়ে চলা সেই আন্দোলনে শুধু শিক্ষার্থী বা সাধারণ মানুষই নয়, বিনোদন অঙ্গনের অনেক তারকাও সরব ছিলেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরাসরি মাঠে।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, যিনি বর্তমানে সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের পাশে ছিলেন। ৫ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের পর তিনি ফেসবুকে লেখেন: "ধৈর্য এবং সংযম, প্রিয় ভাই ও বোনেরা। ভালোবাসা সবাইকে।" এক ঘণ্টা পর তিনি আরও লিখেন: "৩৬ জুলাইয়ে স্বাধীন দেশে স্বাগতম! কী করে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্থপতির কন্যা থেকে পৃথিবীর ইতিহাসে নিকৃষ্টতম এবং নিষ্ঠুরতম স্বৈরশাসকে পরিণত হলো শেখ হাসিনা, এটা ভবিষ্যতে ইতিহাসের ছাত্ররা মনোযোগ দিয়ে পাঠ করবেন। এবং রাজনীতিকরা শিক্ষা নেবেন আশা করি।”
তিনি আরও বলেন, বিজয়ের আনন্দ অবশ্যই করবো! কিন্তু এখন সময় সংযমেরও, চোখকান খোলা রাখারও। আমরা ২০ বছর প্রতিহিংসার রাজনীতি দেখেছি। প্রতিহিংসার উত্তর দিবো আমরা কাইন্ডনেস এবং এমপ্যাথি দিয়ে... নিশ্চয়ই আমরা একটা মানবিক গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণের দিকে আগাইয়া যাব। লাস্টলি, স্যালুট টু বাংলাদেশী ইয়ুথ অ্যান্ড পিপল ফ্রম অল ওয়াকস। টুগেদার উই স্ট্যান্ড টল।”
শুধু ফারুকী নয়, সেই সময় ঢালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমণিও আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। সরকারের পতনের পর সহিংসতা এড়িয়ে সংযম ও দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়ে তিনি লিখেছিলেন: "শান্তি চাই! লুটপাট, থানা আক্রমণ, প্রতিহিংসা চাই না! আমরা সংযত হই, দায়িত্ববান হই। প্রিয় বাংলাদেশে আর রক্তপাত চাই না।”
সেদিন বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে সংগীতশিল্পী আসিফ আকবর লিখেছিলেন, “সন্তানদের মেধা বাংলাদেশের সেরা সম্পদ। এই বাংলাদেশ পরিচালিত হতে হবে মেধাবী দেশপ্রেমিকদের মাধ্যমে... স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, ধৈর্য্য ধরতে হবে।”
স্ট্যাটাসের শেষে তিনি লেখেন, “দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা। সবুজের বুকে লাল, সেতো উড়বেই চিরকাল। সাবাশ বাংলাদেশ। ভালবাসা অবিরাম।”
এদিকে অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন সরকারের পতনের পর বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি ফেসবুকে লেখেন:
এখনই সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগ বন্ধ করার ডাক দিচ্ছি... আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন যদি আমাদের হিন্দু ভাই-বোন এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করা হয়।
তিনি আরও লেখেন, আমরা স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু বর্তমান সহিংসতা নিন্দনীয়... সেনাবাহিনীকে ছাত্রদের সাথে সরাসরি আলোচনা করতে দিন, যারা আবারও আমাদের জাতিকে রক্ষা করেছে।
এইসব বার্তাগুলো আন্দোলনের পরবর্তী পর্যায়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের এসব তারকার আহ্বান ছিল, বিজয়ের আনন্দে ভেসে না গিয়ে সংবেদনশীল, মানবিক ও দায়িত্বশীল আচরণে নিজেদের নিয়োজিত রাখা।