রূপপুর চালু হবে নিরাপদভাবে: অপপ্রচারের গুজব উড়িয়ে
- পাবনা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:৩৮ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। দীর্ঘ এক দশক ধরে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত পরমাণু সংস্থা রোসাটমের তত্ত্বাবধানে অবকাঠামো নির্মাণের পর বর্তমানে পরমাণু জ্বালানি ইউরেনিয়াম লোডের প্রস্তুতি চলছে। তবে প্রকল্পটি নিয়ে একের পর এক নেতিবাচক সংবাদ এবং উদ্বেগ ছড়ানোর চেষ্টা চলছে।
রূপপুর প্রকল্পের কর্মকর্তারা এই উদ্বেগকে অপপ্রচার হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারা বলছেন, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থা (আইএইএ) এবং বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া, নিরাপত্তার শর্ত পূরণ না করে উৎপাদনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের (এনপিসিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাবেক প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জাহেদুল হাছান বলেন, “বায়েক এবং বায়রা’র অনুমোদন ছাড়া কেন্দ্র চালু করা হবে না। নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, আইএইএ একটি বিশেষজ্ঞ দল গত ১০–২৭ আগস্ট রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রি-ওসার্ট মিশন সম্পন্ন করেছে। সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটে সফর সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করেছে। এই দল তিন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে, যার পরেই ফুয়েল লোডিং করা সম্ভব হবে।
আইএইএ-এর পর্যবেক্ষণে তিনটি বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে:
১. অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি ও প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ,
২. প্ল্যান্ট অপারেশনের মান ও তত্ত্বাবধানের গুণমান শক্তিশালী করা, এবং
৩. কমিশনিং চলাকালীন যন্ত্রপাতি সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ।
রূপপুর প্রকল্পে প্রায় ১,৫০০টি নন-নিউক্লিয়ার পরীক্ষা করতে হবে, যার মধ্যে প্রায় ৯০০টি ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকি পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশনা রয়েছে।
প্রকল্প কর্মকর্তারা বলেছেন, ইউনিট-২ এর কিছু যন্ত্রাংশ ইউনিট-১ থেকে নেওয়া হলেও এটি প্রযুক্তিগতভাবে গ্রহণযোগ্য। এছাড়াও, আইএইএ’র পরামর্শ মেনে সকল নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পরই ফুয়েল লোডিং করা হবে।
ড. জাহেদুল হাছান আরও জানান, “সর্বাধিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে, এবং বাকি কিছু পরীক্ষা সম্পন্ন করতে খুব কম সময় লাগবে। প্রি-ওসার্ট মিশনের পর্যবেক্ষণ নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
প্রকল্প কর্তৃপক্ষের এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, রূপপুর পারমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকলে এবং নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে তবেই উৎপাদনে যাওয়া হবে। বর্তমানে চলছে শেষ প্রস্তুতি ও নিরাপত্তা যাচাই, যা সম্পন্ন হলে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হবে।