দরকার হলে কেয়ামত পর্যন্ত অডিট বন্ধ থাকবে: এনবিআর চেয়ারম্যান
- প্রকাশঃ ০৬:৫৫ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০২৫

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান বলেছেন, এনবিআরের অডিট রিপোর্টের মান নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে। তিনি বলেন, “অডিটের ঘোষণাগুলো দেখলে বোঝা যায় এখানে প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি।” তিনি আরও জানান, বর্তমানে এনবিআরে ম্যানুয়াল অডিটের সিলেকশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, কারণ ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে একই ব্যক্তি প্রতি বছর অডিটের আওতায় পড়ছেন। তিনি বলেন, “আমরা বলেছি অডিট হবে ঝুঁকির ভিত্তিতে। যতদিন ডিজিটাল সিস্টেম চালু হবে না, ততদিন ম্যানুয়াল ভ্যাট অডিট বন্ধ থাকবে। দরকার হলে কেয়ামত পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। আমাদের অটোমেটেড সিস্টেম করতে হবে।”
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘করপোরেট কর এবং ভ্যাটে সংস্কার: এনবিআরের জন্য একটি বিচারমূলক দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক ডায়ালগে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান ন্যূনতম করকে কালাকানুন আখ্যায়িত করে বলেন, “কোনো সন্দেহ নেই, ন্যূনতম কর একটি কালাকানুন। কর হবে মুনাফার ওপর, না হলে মিনিমাম কর নির্ধারণ করা হচ্ছে। এটি ঠিক করতে গেলে কর আহরণ কমে যাবে।”
তিনি আরও জানান, “আমরা যে পরিমাণ ঋণ করেছি, তা পরের প্রজন্মের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছি। যথেষ্ট কর আদায় না করলে বিপদ হবে।”
কর জিডিপি অনুপাত ক্রমেই কমছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “গত বছর আমাদের কর জিডিপি অনুপাত ছিল ৭.৪, এ বছর আরও কমে ৬.৬। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলে তারা বলেছে, তাদের অনুপাত ১২.২। এটি দিয়ে ঋণ পরিশোধ ও দেশের উন্নয়ন করা অনেক চ্যালেঞ্জের।”
চেয়ারম্যান এও বলেন, “আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি। দেশ অনেক বড়, মানুষের কর্মসংস্থান করতে হয়। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বলেছি আসুন, কর দিতে হবে না। করছাড় এত ব্যাপক যে কর জিডিপি অনুপাত বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।”
কর অব্যাহতির সংস্কৃতিকে সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীরা সময়সীমা শেষ হওয়ার পরও বারবার ছাড় চান। দুদিন কর দিতে হয় না—যেদিন রোদ, যেদিন মেঘলা। এই সংস্কৃতিতে কর জিডিপি অনুপাত বাড়ানো কঠিন।”
চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান শেষ করেন, “আমাদের অবশ্যই অনেক সমস্যা আছে। সেগুলো সমাধান করতে হবে। আমরা স্বচ্ছ ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।”