জেনেভা ক্যাম্পে সংঘর্ষ: পিস্তল ও সামুরাই হাতে হামলাকারী যুবক গ্রেপ্তার

‎রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদককারবারিদের মধ্যে চলমান দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় অস্ত্রশস্ত্রসহ এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি ডান হাতে পিস্তল ও বাম হাতে দেশীয় ধারালো অস্ত্র সামুরাই নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন।

মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় অভিযান চালিয়ে যুবকটিকে আটক করা হয়।

স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, জেনেভা ক্যাম্পে কয়েকদিন ধরে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বুনিয়া সোহেল, চুয়া সেলিম, পিচ্ছি রাজা, গালকাটা মনু ও ইমতিয়াজের গ্রুপের মধ্যে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘর্ষ চলছিল। সংঘর্ষের মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে ককটেল বিস্ফোরণে বুনিয়া সোহেল গ্রুপের জাহিদ নামে এক যুবক নিহত হন। ওই সংঘর্ষের সময় জেনেভা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান এসকে জিলানী বা কানা জিলানীর ছোট ছেলে এসকে নাসিম পিস্তল ও সামুরাই হাতে হামলা চালান। তার কাছে পুলিশি তল্লাশিতে আরও কয়েকটি লুট করা পিস্তল পাওয়া গেছে।

নিহত জাহিদ বুনিয়া সোহেল গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তার পরিবার বুনিয়া সোহেলের ভাই টুনটুনের মাধ্যমে মাদক বিক্রি করতো। স্থানীয়রা বলছেন, জাহিদকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে বুনিয়া সোহেল ও টুনটুন অন্যদের নামে মামলা দিয়ে স্পট দখল করার চেষ্টা করেছেন।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা বলেন, “আজকে আমরা অভিযান চালিয়ে এসকে নাসিমকে গ্রেপ্তার করেছি। সে জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে অস্ত্র ও সামুরাই হাতে হামলা করেছিল। এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় আমরা এখনো তার হাতে থাকা অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করছি। আশা করছি, অস্ত্র উদ্ধার করতে পারবো।”

জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা, যারা নাম প্রকাশ করতে চাননি, জানিয়েছেন যে ৭ নম্বর সেক্টরে আল ফালাহ গলিতে মাদক স্পট নিয়ন্ত্রণের কারণে মূলত বুনিয়া সোহেল ও পিচ্ছি রাজার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। বুনিয়া সোহেল চুয়া সেলিম ও গালকাটা মনুকে সঙ্গে নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। বুনিয়া সোহেলের আশীর্বাদে জেনেভা ক্যাম্পের ৪ নম্বর সেক্টরে নতুন মাদক স্পট খুলে গালকাটা মনু ব্যবসা পরিচালনা করছেন, যা নিয়ে অন্যান্য গ্রুপের সঙ্গে সংঘাত দেখা দেয়। এ সংঘর্ষের সময় বুনিয়া সোহেল মিরপুরের পল্লবী ক্যাম্প থেকে ‘বোম কাল্লু’ নামে এক সন্ত্রাসীকে ভাড়া করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। বোম তৈরি করার সময় গত বুধবার (২২ অক্টোবর) তিনি আহত হয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

অধিক তথ্য অনুযায়ী, জেনেভা ক্যাম্পে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী বুনিয়া সোহেলকে হেরোইন সরবরাহ করেন আরেক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী চাপা আরিফ। তবে পুলিশের এখনও তার সন্ধান মেলেনি। চাপা আরিফ নিজে ও তার স্ত্রী প্যারাডো গাড়ি ব্যবহার করে প্রতিদিন জেনেভা ক্যাম্পে হেরোইন সরবরাহ করেন। এর মাধ্যমে বুনিয়া সোহেল প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার হেরোইন বিক্রি করেন।