টেন্ডার ছাড়াই বড় LNG প্রকল্পে আগাতে পারে সরকার, প্রশ্ন স্বচ্ছতা নিয়ে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:৪৩ পিএম, ১৮ জুলাই ২০২৫
স্বচ্ছতা এবং সংস্কারের অঙ্গীকার থাকা সত্ত্বেও, বাংলাদেশ সরকার একটি গুরুত্বপূর্ণ এলএনজি অবকাঠামো প্রকল্পে প্রতিযোগিতামূলক টেন্ডার প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই চুক্তিতে যেতে পারে বলে নতুন এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) প্রকাশিত Platts LNG Daily-র প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে বছরে ৪.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন একটি ভাসমান স্টোরেজ ও পুনঃগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (FSRU) নির্মাণ নিয়ে ওমানভিত্তিক ট্রেডিং প্রতিষ্ঠান ওকিউ ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের (OQT) সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপর্যায়ের আলোচনা চলছে। প্রকল্পটি ২০২৭ সালের মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য এবং দেশের ক্রমশ কমে আসা গ্যাসের রিজার্ভ ও বাড়তে থাকা এলএনজি আমদানির প্রয়োজন মেটাতে তাৎপর্যপূর্ণ বিবেচিত হচ্ছে।
যদিও এলএনজি অবকাঠামো সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তেমন বিতর্ক নেই, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, উচ্চ ব্যয়সংবলিত এবং কৌশলগত এমন একটি প্রকল্পে উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া আগানো হলে স্বচ্ছতা ও নীতিগত মানদণ্ডে প্রশ্ন উঠবে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান Platts-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ওকিউ ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের প্রস্তাবটিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে, কারণ এটি দেশে এলএনজি আমদানির সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারে।
তবে সমালোচকরা মনে করেন, OQT এর পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় এবং এটি মূলত একটি ট্রেডিং কোম্পানি হওয়ায় এই খাতে সরাসরি চুক্তি করার যৌক্তিকতা দুর্বল। প্রতিষ্ঠানটি আগে কখনো FSRU পরিচালনা বা নির্মাণ করেনি।
এই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে একজন জ্বালানি বিশ্লেষক জানান, সরাসরি চুক্তি হলে সরকারের সদ্য বাতিল করা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত ক্রয় আইন ২০১০-এর সংস্কার প্রচেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এ আইনের মাধ্যমে আগে দরপত্র ছাড়াই নানা প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ থাকলেও, সেটি বাতিল হওয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের আশা জাগে। কিন্তু আবারও যদি টেন্ডার ছাড়া অগ্রসর হওয়া হয়, তাহলে তা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নেতিবাচক বার্তা দেবে।
একজন ঢাকাভিত্তিক জ্বালানি আইন বিশেষজ্ঞ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, “একটি তুলনামূলকভাবে অনভিজ্ঞ ট্রেডিং ফার্মের সঙ্গে দরপত্রবিহীন আলোচনার মাধ্যমে সরকার জনগণের স্বার্থে ব্যয় সাশ্রয় ও উদ্ভাবনের সুযোগ হাতছাড়া করতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে এটি দেশের বিদ্যমান নীতিমালারও ব্যত্যয় ঘটায়।”