হোমল্যান্ডে'র সাবেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের নিয়ে চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন
- ফরিদ শ্রাবণ
- প্রকাশঃ ০৪:৩৬ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুইরেন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে বহিষ্কৃত সাবেক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে দশটায় সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তাদের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে বারোটায় শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত এমডি আবদুল মতিন ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (মার্কেটিং) লুতফুন নাহার আলোকে অব্যাহতি ঘোষণা করার পরেও তারা কর্মস্থল ত্যাগ করেননি বলে জানান।
খবর নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ ১৪৯তম বোর্ড মিটিংয়ে আবদুল মতিনকে ভারপ্রাপ্ত এমডি এবং লুতফুন নাহার আলোকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (মার্কেটিং) হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর আর কোন বোর্ড মিটিং ছাড়া কিভাবে তাদেরকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, এই বিষয়ে কোন যৌক্তিক উত্তর দিতে পারেননি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এবং প্রেস রিলিজে সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান পরিচালক জুলহাস ও মোহাম্মদ সালেহ হোসেনের নাম থাকলেও অজানা কারণে পরবর্তীতে ব্যানার এবং প্রেস রিলিজ পরিবর্তন করে শুধু মাত্র এমডি আবদুল মতিন ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (মার্কেটিং) লুতফুন নাহার আলোর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক কামাল মিয়া বহিষ্কৃত সাবেক ডিএমডি জাকির হোসেন সরকার, বহিষ্কৃত সাবেক ডিএমডি সাহাদাত হোসেন, চট্রগ্রামের বহিষ্কৃত সাবেক ডিজিএম আমিম উল্ল্যাহ।
সাবেক ডিএমডি জাকির হোসেনকে ২০১০ সালে দুর্নীতির দায়ে কোম্পানি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ-এর মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সাবেক ডিএমডি সাহাদাত হোসেন কোম্পানিতে মাত্র তিন মাস কর্মরত থাকা অবস্থায় অযোগ্য বিবেচিত হয়ে বহিষ্কার হয়। বহিষ্কৃত সাহাদাত হোসেন কোম্পানির এমডি হওয়ার স্বপ্নে এই ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চে বসা অবস্থায় বহিষ্কৃত সাহাদাত হোসেনের কাছে তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি মঞ্চ ত্যাগ করে পালিয়ে যায়। আরেক বহিষ্কৃত ডিজিএম (চট্রগ্রাম সার্কেল) আমিম উল্ল্যাহকে কোম্পানি থেকে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে ২০২৪ সালের ১০ মার্চ বহিষ্কার করা হয়।
চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন সম্পর্কে অনুসন্ধান করে জানা যায়, কোম্পানিতে কোন শেয়ার না থাকার পরেও ১৭ বছর ধরে শেয়ার সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে অবৈধভাবে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুইরেন্স লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদে বহাল তবিয়তে আছেন।
এ ছাড়া গ্রাহকের ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার অন্যতম আসামী বর্তমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন। এই মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এই বিষয়ে জামাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে বলেন, অভিযোগ যে কারো বিরুদ্ধে করা যায় বলে তিনি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান।
ঢাকাওয়াচের অনুসন্ধানে উঠে আসে, সর্বশেষ বোর্ড মিটিং সিলেটে ৪ ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার কথা থাকলেও হাই কোর্টের নির্দেশে সেটি স্থগিত হয়। কোন বোর্ড মিটিং ছাড়া বহিষ্কৃত কর্মকর্তাদের নিয়ে কোম্পানির প্যাড এবং সিল জালিয়াতি করে হোমল্যান্ডের বহিষ্কৃত সচিব শাহিদুল ইসলামের সহযোগিতায় কোম্পানির বিরুদ্ধে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে চলেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন। অথচ তিনি গ্রাহকের স্বার্থ চিন্তা না করে বোর্ডের বাকি পরিচালকদের সাথে সমন্বয় না করে কোম্পানির মানহানি এবং সম্মান ক্ষুণ্ণ করার কাজে লিপ্ত আছেন।