বিএনপির ৭ আইনজীবীকে অব্যাহতি

বিএনপির সাত আইনজীবীকে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে আপিল বিভাগ। রোববার (৩ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এদিকে, আদালতে উপস্থিত না থাকার কারণে আবেদনকারীকে এক লাখ টাকা জরিমানা দেওয়া হয়েছে। এই জরিমানার টাকা জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনে জমা দিতে হবে।অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাত আইনজীবীর মধ্যে রয়েছেন: জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নি, সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল।এর আগে, ১২ জুন আপিল বিভাগের দুই বিচারপতির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও মিছিলের ঘটনায় এই আইনজীবীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়।

সাবেক মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির ৫ দিনের রিমান্ডে

বিএনপি কর্মী মকবুলকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানার মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।শুক্রবার (১ নভেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হাচান আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেরবা মাহবুব ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।উবায়দুল মোকতাদির ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০২১ সালের মার্চে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতে ইসলামীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে মাদরাসাছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় মোকতাদিরসহ ২৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গত ২৩ আগস্ট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।এছাড়া, ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিএনপির নেতা খালেদ হোসেন মাহবুবের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগে মোকতাদিরসহ ১৬৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আরেকটি মামলা হয় গত ২৭ আগস্ট।উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা বিভিন্ন হত্যা ও হামলার মামলায় গ্রেফতার হচ্ছেন, এবং অনেকেই আত্মগোপনে আছেন।

হত্যা মামলায় হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে মঈন কারাগারে

বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে সেরনিয়াবাত মঈন উদ্দিন আবদুল্লাহকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) এ মামলায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক তন্ময় কুমার বিশ্বাস মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষে জামিন চাওয়া হয়। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান তার জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।এর আগে গত ২৬ অক্টোবর তার পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।২৫ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে রাজধানীর গুলশান-২ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী মহাসমাবেশ ডাকে। এই মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। এতে অনেক বিএনপির নেতাকর্মী আহত হন। যুবদল নেতা শামীম মারা যায়। এ ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

খালেদা জিয়ার আরও এক মামলা বাতিল

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া আরও একটি নাশকতার মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এর আগে, বুধবার (৩০ অক্টােবর) বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় নাশকতার অভিযোগে করা ১০টি মামলা বাতিল করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলা বাতিল করে রায় দেন।এদিন আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।এ ছাড়াও ওই দিন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা বাতিল করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ মামলা বাতিল করে রায় দেন।

ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি

সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সব বিচারপতির অংশগ্রহণে ফুলকোর্ট সভা ডেকেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। আগামী ৪ নভেম্বর বিকালে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এ তথ্য জানায়।ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠান সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের জারি করা এক নথিতে বলা হয়, আগামী ৪ নভেম্বর বিকাল ৩টা ৩০ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে প্রশাসন ভবন-৪ এর দোতলায় অবস্থিত কনফারেন্স রুমে ফুলকোর্ট সভা অনুষ্ঠিত হবে।

লাশ পোড়ানোর ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আশুলিয়ায় ৪৬ লাশ পোড়ানোর ঘটনায় গণহত্যার অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা শহীদুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।এর আগে সকাল ১০ টার দিকে পুলিশি নিরাপত্তায় শহীদুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।জানা গেছে, গতকাল রাতে ঢাকার বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানায় তাকে নিয়ে আসা হয়। শাহবাগ থানা পুলিশ সকালে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসেন।গত ২৭ অক্টোবর জুলাই-আগস্ট গণহত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিবসহ ১৭ সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। রোববার (২৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে তাদের হাজিরের নির্দেশনা চেয়ে আবেদন করেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন পিনাকী ভট্টাচার্য

রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চক্রান্তে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য। পিনাকী ছাড়া ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মফিজুর রহমান আশিককেও অব্যাহতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক নূরে আলম মামলাটির অভিযোগপত্র আমলে না নিয়ে এ আদেশ দেন।বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য দেন।জানা গেছে, গত ৯ অক্টোবর মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিলের দিন ধার্য ছিল। তবে বিচারক অভিযোগপত্র পর্যালোচনা শেষে অপরাধ আমলে না নিয়ে পিনাকীসহ দুইজনকে অব্যাহতি দেন।এর আগে ২০২২ সালের ১৫ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় পিনাকী ভট্টাচার্যসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) বিভাগের উপপরিদর্শক এম আব্দুল্লাহিল মারুফ বাদী হয়ে মামলাটি করেছিলেন।মামলায় মফিজুর রহমান ও মুশফিকুল ফজল আনসারী নামে আরও দুইজনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে গত ৭ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিটিটিসির উপপরিদর্শক মোহাম্মদ রাহাত হোসেন পিনাকীসহ দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার উপ-প্রেসসচিব মুশফিকুল ফজল আনসারীকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়।মামলার অভিযোগে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি পোস্ট ২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর নজরে আসে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের। ওই পোস্টে পুলিশ সদস্যদের সম্পর্কে বিকৃত তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়। ওই ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে ওই বছরের ১৫ অক্টোবর পল্লবীর বাসা থেকে মফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে পুলিশ মফিজুরের দুটি মুঠোফোন জব্দ করে।সিটিটিসির সিটি ইন্টেলিজেন্স অ্যানালিসিস বিভাগের উপপরিদর্শক কে এম আবদুল্লাহ হিল মারুফ মামলায় অভিযোগ করেন, আসামি মফিজুর রহমান তার ভুয়া ফেসবুক আইডির মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এই তালিকায় আছেন পিনাকী ভট্টাচার্য ও মুশফিকুল ফজল আনসারী।মিরপুরে পুলিশ বাহিনীর একটি অভিযানের ঘটনাকে বিকৃতভাবে প্রচার করা হয়। সেই তথ্য ও ছবি পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠানো হয়।

এক সপ্তাহে ৭৫২ সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়

বিগত এক সপ্তাহে দেশের ১১টি জেলার বিভিন্ন আদালতে ৭৫২ জন আইনজীবীকে সরকারি আইন কর্মকর্তা- সরকারি কৌঁসুলি (জিপি), অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি, সহকারী সরকারি কৌঁসুলি, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।এদের মধ্যে ৮৩ জনকে কিশোরগঞ্জ, ৬৩ জনকে কক্সবাজার, ২৫ জনকে রাজবাড়ী, ১২৮ জনকে কুষ্টিয়া, ৩৪ জনকে সাতক্ষীরা, ৯১ জনকে নারায়ণগঞ্জ, ১৪৫ জনকে বরিশাল, ৬৩ জনকে সুনামগঞ্জ, ৪৪ জনকে নেত্রকোনা, ৫৬ জনকে নাটোর ও ২০ জনকে পঞ্চগড় জেলার জেলা ও দায়রা জজ ও এর অধীন আদালত, বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জজ আদালতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।গত ২৪, ২৯ ও ৩০ অক্টোবর তারিখে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর উইং থেকে এ সম্পর্কিত তিনটি নিয়োগাদেশ জারি করা হয়।উপ সলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এসব নিয়োগাদেশে, উল্লিখিত ১১ টি জেলার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও এদের অধীন আদালত, বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রাইব্যুনাল এবং বিশেষ জজ আদালতে এর আগে নিয়োগ করা সব আইন কর্মকর্তার নিয়োগাদেশ বাতিলক্রমে তাদেরকে নিজ নিজ পদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

সাংবাদিক শেখ জামাল রিমান্ডে

বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক শেখ জামালের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।বুধবার (৩০ অক্টোবর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।এর আগে গত ২৪ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তন্ময় কুমার বিশ্বাস তাকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তবে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমানের আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়ে আজ ৩০ অক্টোবর রিমান্ড শুনানির তারিখ ধার্য করেন।এর আগে ২৩ অক্টোবর রাতে রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি দল।জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী মহাসমাবেশ ডাকে। এই মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। এতে অনেক বিএনপির নেতাকর্মী আহত হন। যুবদল নেতা শামীম মারা যায়। এ ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাশকতার ১০ মামলা বাতিল করলো হাইকোর্ট

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজধানীর দারুস সালাম, যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন থানায় নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা ১০টি মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।আদালতে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভোকেট ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।

গণহত্যার অভিযোগে প্রথম কোনো পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানাভুক্ত আসামি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার মো. জসীম উদ্দীন মোল্লাকে আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হচ্ছে।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শুরু হওয়ার পর এই প্রথম গণহত্যার অভিযোগের কোনো আসামিকে হাজির করা হচ্ছে। এ বিষয়টি জানিয়েছেন প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ।তিনি বলেন, এই প্রথম কোনো আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হচ্ছে। এর আগে আর কোনো আসামিকে আদালতে তোলা হয়নি। মিরপুরের সাবেক ডিসি জসীম গ্রেফতার, নেওয়া হচ্ছে ট্রাইব্যুনালেগত ১৩ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মো. মাহবুর রহমান শেখ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে মো. জসীম উদ্দীন মোল্লাকে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। আর বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার ২০ জনকে হাজির করতে ২৭ অক্টোবর নির্দেশ দেন তিন বিচারপতির ট্রাইব্যুনাল। সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, দীপু মনি, ফারুক খানসহ ১৪ জনকে ১৮ নভেম্বর হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। আর ২০ নভেম্বর হাজির করতে বলা হয় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কমকর্তা জিয়াউল আহসানসহ আরও ৬ জনকে।এছাড়াও, সেদিন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১৭ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

সাবেক আইনমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, আইজিপিসহ ৮ জন ফের রিমান্ডে

রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক বেশ কিছু মন্ত্রী ও এমপি এবং দলের অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের ফের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান জিয়াকে আবারও রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর সিএমএম কোর্ট তাদের ফের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন।এছাড়া আজ বিভিন্ন মেয়াদে আরও কয়েকজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। তারা হলেন- সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, সাবেক এমপি হাজী সেলিম ও ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকত। তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় করা হত্যা মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এদিকে শাহবাগ থানায় করা মামলা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ৫ দিন ও বাড্ডা থানায় আরেক হত্যা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।বাড্ডা থানার আরেক হত্যা মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান জিয়ার আবারও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এছাড়াও যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানের ৪ দিনের রিমান্ড, নিউমার্কেট থানার হত্যা মামলায় সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে ৫ দিনের এবং ধানমন্ডি থানার মামলায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ৩ দিন ও বংশাল থানার মামলায় তাকে ৪ দিনের রিমান্ড দেন। এবারে মোট ৭ দিন রিমান্ড থাকবেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এর আগে তিনি প্রায় দেড় মাসের বেশি সময় ধরে রিমান্ডে ছিলেন। এদিকে আবারও চকবাজার থানার মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি হাজী সেলিম ৫ দিন এবং ধানমন্ডি থানার মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।এছাড়াও রাজধানীর চকবাজার থানায় করা হত্যা মামলায় ছাত্রলীগ নেতা তানভীর হাসান সৈকতকে ফের ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করা সম্ভব নয় বললেন আসিফ নজরুল

দেশে ফৌজদারি আইনে মৃত্যুদণ্ডের যে বিধান রয়েছে তা ‘বাস্তবতার নিরিখে বাতিল করা সম্ভব নয়’ বলে জাতিসংঘকে জানানোর কথা বলেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।মঙ্গলবার সচিবালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ফলকার টুর্কের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা সাংবাদিকদের বলেন।আসিফ নজরুল বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এটা নিয়ে উনি (টুর্ক) বেশি প্রশ্ন তুলেছেন। উনি বলেছিলেন যে, মৃত্যুদণ্ড রহিত করার কোনো সুযোগ আছে নাকি। আমি বললাম এটা তো বর্তমান বাস্তবতায় সম্ভব না।“কারণ আমাদের পেনাল প্রভিশন; আমাদের শত বছরের যে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেম, যেখানে মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে। এখন আমরা হুট করে যে ফ্যাসিস্টদের হাতে হাজার-হাজার তরুণ নিহত হয়েছে, হঠাৎ করে তার বিচারকে সামনে রেখে মৃত্যুদণ্ড বাতিল করার প্রশ্নই আসে না।”২০১৭ সালে পিলখানা হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে হত্যা, ধর্ষণ, গুপ্তচরবৃত্তি, বিশ্বাসঘাতকতা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরেছিল হাই কোর্ট।সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারক নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, বর্তমান সময়ে বিশ্বের অনেক দেশ সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডকে সমর্থন না করলেও বেসামরিকদের অপরাধ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে তা বড় ভূমিকা রাখে।আইন উপদেষ্টা বলেন, “তারা (জাতিসংঘ) সারা পৃথিবীতেই মৃতুদণ্ড রহিত করার কথা বলেন, তাদের একটা অপশনাল প্রটোকল আছে, ওই প্রটোকলের মূল কথাই হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড রদ করা। কিন্তু পৃথিবীতে অল্প দেশই মৃত্যুদণ্ড রদ করেছে।“ফলে এটা তারা তাদের কমিটমেন্ট থেকে বলবে। কিন্তু আমাদের যে জুডিসিয়াল কালচার বা ক্রিমিনাল জাস্টিস আছে- সেগুলোতো আমাদের কাছে প্রাধান্য পাবে। এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বাংলাদেশের কোনো সরকারই এই অপশনাল প্রটোকলের পক্ষ রাষ্ট্র হয় নাই।”আইনগত যেকোনো বড় পরিবর্তন সমাজের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে মিল রেখে করতে হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কাজেই আমরা বলেছি, যৌক্তিকভাবে এই প্রত্যাশা করার স্কোপ নাই।”এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, “আমাদের যে আইনগত সংস্কার, সেটার সঙ্গে জাতিসংঘ ইনভলব আছে। আমাদের যদি কোনো ফরেনসিক বা টেকনিক্যাল সাপোর্ট লাগে বা ক্যাপাসিটি বিল্ডিং লাগে, সেটা উনারা দেবেন বলেছেন।“আমরা সুবিচার করব। আমরা প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা থেকে বিচার করছি না। আমরা অবিচার করব না।”অপরাধের সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা, অভিযুক্তদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে সাক্ষী আনার সুযোগ, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক রাখার সুযোগ, অভিযুক্তদের বিদেশি আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ প্রভৃতি বিষয়ে ফলকার টুর্ক প্রশংসা করেছেন বলে জানিয়েছেন আসিফ নজরুল।তিনি বলেন, “মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার কথা বলেছেন হাই কমিশনার, সে বিষয়েও আমরা আমাদের প্রত্যয়ের কথা জানিয়েছি। আমাদের সরকারের সংস্কারের যে কাজ, ট্রানজিশনাল ট্রান্সফরমেশনের কাজ, এই সরকারের প্রতি উনার সর্বাত্মক সমর্থনের কথা উনি জানিয়েছেন।“উনি দুটি প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন, একটা হচ্ছে বিচার বিভাগ স্বাধীন করা। সেটা অামরা বলেছি, আমরা অবশ্যই কমিটেড এই প্রসঙ্গে। আমাদের প্রধান বিচারপতি একটা পৃথক সচিবালয়ের প্রস্তাব দিয়েছেন। অবশ্যই, সেটা আমরা নীতিগতভাবে গ্রহণ করি। কিন্তু এটা কীভাবে বাস্তবায়ন হইবে, সেটা আমরা আলাপ-আলোচনা করা ঠিক করব।”

আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকালে এ রিটটি দায়ের করেন তারা।রিটে আওয়ামী লীগ যাতে কোনো পলিটিকাল অ্যাক্টিভিটি চালাতে না পারে তার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি সিকদার মো. মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এটি শুনানি হতে পারে বলে জানা গেছে।আইনজীবী অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দলটি রাজনৈতিক কার্যক্রম যাতে পরিচালনা করতে না পারেন সেজন্য এ রিট করা হয়েছে। গত আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে আরেকটি রিট করা হয়েছিল। বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চে তা খারিজ করে দেয়।এর আগে গত আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চেয়ে একটি রিট করা হয়েছিল। শুনানি শেষে রিটটি তখন খারিজ করে দেন। সে সময় আদালতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিপক্ষে কথা বলেছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।এদিকে গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছিল। তার আগেই তাদের দাবি পূরণ করে অন্তর্বর্তী সরকার।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করিয়া বিগত ১৫ বৎসরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুম কেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানাবিধ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এতৎ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হইয়াছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হইয়াছে; এবং যেহেতু ১৫ জুলাই ২০২৪ তারিখ হইতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করিয়া শত শত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিদের হত্যা করিয়াছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করিয়াছে; এবং যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রহিয়াছে যে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত রহিয়াছে; সেহেতু সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা-১৮ এর উপধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করিল।’এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

৫ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে ব্যরিস্টার সুমন

যুবদল নেতা ও সহকারী বাবুর্চি হৃদয় মিয়াকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের ৫ দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।রোববার (২৭ অক্টোবর) সকালে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের পক্ষে আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করে। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।গত ২১ দিবাগত মধ্যরাতে ঢাকার মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ২২ অক্টোবর আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই হৃদয় জুমার নামাজ আদায় করে মিরপুর-১০ নম্বরে সমাবেশে যান। সেখানে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ককটেল বোমা নিক্ষেপ ও গুলিও চালায়। এতে গুলিবিদ্ধ হন হৃদয়। তিনি হবিগঞ্জের মাধবপুর ১০ নম্বর হাতিয়াইন ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি। এ ঘটনায় তিনি ২৩ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন।

অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে ‌‘বিপ্লবী সরকার’ হিসেবে ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশের জন্য সরকারের প্রতি নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়েছে। গেজেট প্রকাশ না করার জন্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে বেআইনি ঘোষণা করে আদেশও চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে।একইসঙ্গে জুলাই বিপ্লবে জীবন উৎসর্গকারী ও আহতদের ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে সম্মানিত করার ঘোষণা দিয়ে গেজেট প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে বুধবার (২৩ অক্টোবর) রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এএসএম শাহরিয়ার কবির।রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং আইন উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।ব্যারিস্টার শাহরিয়ার কবির বলেন, গত ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর বর্তমান সরকার শুধু সংবিধানের বাইরে নয়, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বাইরেও গঠিত। যদি এমন কোনো ঘোষণা না থাকে, তাহলে আদালত বর্তমান সরকারকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করতে পারে এবং সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার বিকল্প ঘোষণা করতে পারে।তিনি বলেন, একটি বিপ্লবী সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থান বা আদালতের রায় দিয়ে উৎখাত করা যায় না। সংবিধানের জরুরি বিধানের অধীনে একটি বিপ্লবী সরকার গঠন করা যেতে পারে। রিট আবেদনে বলা হয়, বিপ্লবের তরঙ্গ বিচার বিভাগ, প্রেস, প্রশাসন এবং একটি ঐক্যমতে গঠিত সরকারসহ জীবনের সব স্তরকে প্রভাবিত করেছে, যা একটি বিপ্লবী সরকার হিসেবে সংবিধানের আওতার বাইরে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সরকার আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে কোনো ঘোষণা প্রকাশ করেনি। মাটির সন্তানকে ২০২৪ সালের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতিও দেয়নি।রিটকারী আইনজীবী বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা-সজীব ওয়াজেদ জয় ম্যাকিয়াভেলি তত্ত্বের অধীনে বিপ্লবী সরকারকে উৎখাত করার চেষ্টা করছেন। সংবাদপত্র থেকে এটি জাতির নজরে এসেছে, তিনি (শেখ হাসিনা) নির্বাসনে সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন।আগামীকাল রোববার (২৪ অক্টোবর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রিটের শুনানি হতে পারে।

গ্যাটকো দুর্নীতির মামলায় অব্যাহতি পেলেন খালেদা জিয়া, ১২ জনের বিচার শুরু

গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। তবে অপর ১২ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু তাহেরের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।১২ আসামি হলেন– চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আনছার, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল এগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, এ এম সানওয়ার হোসেন, সৈয়দ তানভীর আহমেদ, সৈয়দ গালিব আহমেদ ও এ এম এম শাহাদাত হোসেন।মামলার শুনানিতে খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। এরপর চার্জ গঠনের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। আসামিপক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসেন ভূইয়া অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম চার্জ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে ১২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন।এ সময় উপস্থিত আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। ২০০৮ সালের ১৩ মে তদন্ত শেষে দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন।২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।মামলার বিচার চলাকালে ৯ আসামি মারা যান। এদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম।

৪২ জনকে হত্যা মামলা : খালেদা জিয়াকে খারিজ করে দিয়েছেন সিএমএম আদালত

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৪২ জনকে হত্যা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। আজ বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমান এ আদেশ দেন।মামলা সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধে ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৪২ জন আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। এসব ঘটনায় খালেদা জিয়াসহ তিনজনকে হুকুমের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সরকার বিরোধী আন্দোলনে ৪২ জন নিহতের ঘটনায় খালেদা জিয়া ও বিএনপির তিন নেতার বিরুদ্ধে আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়।মামলার অন্য তিন আসামি হলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. এমাজউদ্দিন আহম্মেদ, দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া।

ময়মনসিংহ ও মৌলভীবাজারে ১৯৮ সরকারি আইন কর্মকর্তা নিয়োগ

ময়মনসিংহ ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন আদালতে ১৯৮ জন আইনজীবীকে সরকারি আইন কর্মকর্তা- সরকারি কৌঁসুলি (জিপি), অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি, সহকারী সরকারি কৌঁসুলি, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগ দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।এদের মধ্যে ৪২ জনকে মৌলভীবাজার ও ১৫৬ জনকে ময়মনসিংহ জেলার জেলা ও দায়রা জজ ও এর অধীন আদালত, বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জজ আদালতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।ময়মনসিংহের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জিপি ও পিপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন যথাক্রমে মো. আজহারুল হক ও মো. আনোয়ার আজিজ (টুটুল) ।মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জিপি ও পিপি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন যথাক্রমে মামুনুর রশিদ ও মো. আব্দুল মতিন চৌধুরী ।গতরাতে (২৩ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর উইং থেকে এ সম্পর্কিত পৃথক নিয়োগাদেশ জারি করা হয়।উপ সলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এই নিয়োগাদেশে, জেলা দুটির জেলা ও দায়রা জজ আদালত ও এদের অধীন আদালত, বিভিন্ন পর্যায়ের ট্রাইব্যুনাল এবং বিশেষ জজ আদালতে এর আগে নিয়োগ করা সব আইন কর্মকর্তার নিয়োগাদেশ বাতিলক্রমে তাদেরকে নিজ নিজ পদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে বিএনপি-জামায়াতের রিভিউয়ের শুনানি আজ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম ও সুজনের ৩টি রিভিউ আবেদনের শুনানি আজ বৃহস্পতিবার। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এ শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।এর আগে বুধবার সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করে জামায়াতে ইসলাম। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আপিল বিভাগে এ রিভিউ আবেদন করেন।গত ১৬ অক্টোবর ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত আগস্টেও আলাদা রিভিউ আবেদন করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনে করা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে তা বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট।১৯৯৬ সালে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট বিভাগ এ রিট খারিজ করেন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করা করেন।এ রায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৫ সালে আপিল করে রিট আবেদনকারী পক্ষ। ২০১১ সালের ১০ মে এ আপিল মঞ্জুর করে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। ঘোষিত রায়ের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বেশ কিছু বিষয়ে আনা পঞ্চদশ সংশোধনী আইন ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরের ৮ বছরের সাজা বাতিল

দুর্নীতির মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিশেষ জজ আদালতের দেয়া আট বছরের কারাদণ্ড বাতিল করে এ রায় দেয় আদালত। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে বাবরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির।এর আগে ২০২১ সালের ১২ অক্টোবর দুর্নীতির মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে আট বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭-এর বিচারক মো. শহিদুল ইসলামের আদালত এ আদেশ দেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন বাবর।২০০৭ সালের ২৮ মে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যৌথবাহিনীর হাতে আটক হন বাবর। ২০০৮ সালের ১৩ জানুয়ারি রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের মামলা করা হয়। মামলাটি করেন সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১-এর সহকারী পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম। তদন্ত শেষে ওই বছরের ১৬ জুলাই দুদকের উপসহকারী পরিচালক রূপক কুমার সাহা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।অভিযোগপত্রে বাবরের বিরুদ্ধে ৭ কোটি ৫ লাখ ৯১ হাজার ৮৯৬ টাকার অবৈধ সম্পদ রাখার অভিযোগ করা হয়। তিনি দুদকে ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩১ হাজার ৩১২ টাকার সম্পদের হিসাব দাখিল করেছিলেন। তার অবৈধ সম্পদের মধ্যে প্রাইম ব্যাংক ও এইচএসবিসি ব্যাংকের দুটি এফডিআরে ৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৯ হাজার ২১৮ টাকা ও বাড়ি নির্মাণ বাবদ ২৬ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৮ টাকা গোপন করার কথা উল্লেখ করা হয়। একই বছরের ১২ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

রংপুরে নিয়োগ পেলো ৩৪ সরকারি আইন কর্মকর্তা

রংপুর জেলার বিভিন্ন আদালতে ৩৪ জন আইনজীবীকে সরকারি আইন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে রংপুর জেলা জজ আদালতের জিপি (সরকারি কৌঁসুলি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. একরামুল হক।বুধবার (২৩ আগস্ট) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ড. মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।এতে বলা হয়, রংপুর আদালতে একজন জিপি, চারজন অতিরিক্ত জিপি এবং সহকারী জিপি হিসেবে তিনজন নিয়োগ পেয়েছেন। এছাড়াও পিপি (পাবলিক প্রসিকিউটর) হিসেবে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একজন (মো. আফতাব উদ্দিন), তিনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে তিনজন, বিশেষ জজ আদালতে একজন, সাইবার ট্রাইব্যুনালে একজন ও সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে একজন নিয়োগ পেয়েছেন। এছাড়াও মানবপাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একজন বিশেষ প্রসিকিউটর ও একজন সহকারী বিশেষ প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এমনকি বিশেষ জজ আদালতে একজন অতিরিক্ত পিপি, জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নয় জন অতিরিক্ত পিপি ও সাতজন সহকারী পিপি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।এর আগে গতরাতে (২২ অক্টোবর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর উইং থেকে উপ-সলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এ সম্পর্কিত নিয়োগাদেশ জারি করা হয়। আদেশে পূর্বে নিয়োগকৃত সকল আইন কর্মকর্তার নিয়োগাদেশ বাতিলক্রমে তাদেরকে নিজ নিজ পদের দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে মূল ভবনে চলবে জুলাই গণহত্যার বিচার

আগামী ৩ নভেম্বরের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার বিচারকাজ চলবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভবনের সংস্কার কাজ পরিদর্শননে এসে একথা জানান আইন উপদেষ্টা।এ সময়, মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির সাথে করা বৈঠক এবং রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি। সংস্কার কাজ পরিদর্শনে তার সাথে ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর এডভোকেট তাজুল ইসলাম জানান, শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের গেফতারি পরোয়ানা আইজিপির কাছে পাঠানো হয়েছে ।এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের মামলায় পৃথক মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।অন্য যাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন– শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, শেখ হাসিনার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, দীপু মনি, আকম মোজাম্মেল হক, শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, সাবেক মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, শেখ সেলিম, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ মামুন, ডিবি হারুন, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকার, প্রলয় কুমার জোয়ার্দার, সাবেক ডিএমপি হাবিবুর রহমান, সাবেক র‌্যাব ডিজি হারুন অর রশিদ, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান, শেখ হাসিনার সাবেক উপদেষ্টা তারেক আনাম সিদ্দিকী, বিচারপতি মানিক, ড. জাফর ইকবাল, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামসহ ৪৬ জন।

শেখ হাসিনার গ্রেফতারি পরোয়ানা আইজিপির কাছে পাঠানো হয়েছে

গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপির) কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে এ বিষয়টি তিনি সাংবাদিকদের জানান। মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে।এদিকে, আগামী ১ থেকে ৩ নভেম্বরের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের মূল ভবনে বিচারকাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।