১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা : খালাস পেলেও আজ মুক্তি মিলছে না বাবরের

চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে খালাস পেলেও এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টা পর্যন্ত তার মুক্তির কাগজপত্র কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার ফরহাদ সরকার। তিনি বলেন, কবে নাগাদ তিনি বের হবেন, সেটিও এখনই বলা যাচ্ছে না। এদিকে বাবরের পিএস মো. হায়দার জানিয়েছেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরের পর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারামুক্তির বিষয়ে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। এর আগে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দেন। আদালতে বাবরের পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির খালাস চেয়ে এ আবেদন করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। এছাড়া অন্য পাঁচজন আসামির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। তারও আগে গত ১৮ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, মহসিন তালুকদার, এনামুল হক, রাজ্জাকুল হায়দারসহ ছয় আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। গত ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়। সেদিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ কয়েকজন আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে বন্দরনগরীর কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা করা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন। এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালাস পেলেন খালেদা জিয়া

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) তাকে খালাস দিয়ে রায় দেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে বিচারিক আদালত ও হাইকোর্টের রায় বাতিল করা হয়েছে। একই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অন্য আসামিরাও সাজা থেকে খালাস পেয়েছেন। সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির আপিল বিভাগ সর্বসম্মতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত এ রায় দেন। রায়ে আদালত বলেছেন, প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এ মামলা করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে খালেদা জিয়ার সম্মানহানি করা হয়েছে। দাতব্য কাজের লক্ষ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামে যে দাতব্য সংস্থা চালু করা হয়; তার একটি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট। ১৯৯১ থেকে ৯৬ সালে সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখায় ‘প্রধানমন্ত্রীর এতিম তহবিল’ নামে হিসাব চালু করা হয়। ১৯৯১ সালের ৯ জুন একাউন্টটিতে কুয়েত আমিরের পাঠানো বিদেশি অনুদান আসে। এই অনুদানের অর্থ পরবর্তী দুই বছরে কোনো এতিমখানায় দান করা হয়নি। দুই বছর পর, জিয়াউর রহমানের দুই ছেলে তারেক রহমান, আরাফাত রহমান এবং তাদের ফুপাতো ভাই মমিনুর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট গঠন করেন। ট্রাস্ট গঠনের পর অনুদানটি দুই ভাগ করে ট্রাস্টের বগুড়া এবং বাগেরহাট শাখার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। আলোচিত এক এগারো সরকারের সময় ট্রাস্ট্রের জন্য কুয়েত আমিরের পাঠানো সেই অর্থের প্রায় ২ কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে। দায়ের করা মামলা। যে মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয় ২০০৯ সালে। সে বছর থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত থাকলেও পরবর্তিতে গতি পায় আবারও। মামলাটির রায় হয় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। পুরান ঢাকার আলিয়া মাদরাসায় ৬৩২ পৃষ্ঠার রায়ে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আকতারুজ্জামান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টে এসে যে সাজা হয়ে যায় ১০ বছরের। এরপর এই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাগারে যেতে হয় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে।

এস আলম পরিবারের ৬৮ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, সম্পদ ক্রোকের আদেশ

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমসহ তার পরিবারের নামে থাকা ৬৮টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি, তার ১৬টি স্থাবর সম্পত্তি জব্দের (ক্রোক) আদেশ দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন । মঙ্গলবার দুদকের উপপরিচালক সিফফাত উদ্দীন এসব সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। পরে বিচারক দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন। জব্দকৃত ১৬টি সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে গুলশানের এস আলম টাওয়ারে ১০ তলা ভবন, ধানমন্ডিতে এক বিঘা জমিসহ ৬ তলা ভবন, ধানমন্ডি লেক সার্কাসে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ জমিসহ ৪ তলা ভবন, গুলশানের ২ হাজার ৬৫৮ বর্গফুট জমির ওপর নির্মিত ফ্ল্যাট, গুলশান ২ এর প্লট দশমিক ৭৮৮৮ একর জমি, উত্তরা আবাসিক এলাকায় ৭ তলা ভবন, ভাটারাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ১০৩ দশমিক ৩ কাঠা জমির প্লট, এক দশমিক ৭ হাজার ২০০ একর জমি, ৯৬ কাঠার জমি, ১ দশমিক ৯ হাজার ৫৩৬ একর জমি, ১১ দশমিক ১ হাজার ৬১ বিঘা, ১৩১ দশমিক ৪ কাঠা জমি।

মডেল তিন্নি খুন: খালাস পেলেন জাপার সাবেক সাংসদ অভি

আনুমানি ২৩ বছর পূর্বে ঢাকায় খুন হওয়া বিজ্ঞাপনের মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত একমাত্র আসামি জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ গোলাম ফারুক অভিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোছা. শাহীনুর আক্তার এ রায় দেন। মামলার নথি থেকে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীর এক নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর ১১ নম্বর পিলারের পাশে ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে মডেল তিন্নির মরদেহ পাওয়া যায়। পর দিন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন। এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কাইয়ুম আলী সরদার। এরপর নিহত তিন্নির মরদেহের ছবি পত্রিকায় ছাপা হলে সুজন নামে নিহতের এক আত্মীয় তা শনাক্ত করেন। পরে মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর তদন্তভার সিআইডিতে ন্যস্ত হয়। তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন সিআইডির পরিদর্শক ফজলুর রহমান। এরপর মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পরিদর্শক সুজাউল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোলাম মোস্তফা, এএসপি আরমান আলী, এএসপি কমল কৃষ্ণ ভরদ্বাজ ও এএসপি মোজাম্মেল হক। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তিন্নি হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়। এ ছাড়া এই মামলায় ২২টি আলামত জব্দ করা হয়। তদন্তে প্রাথমিকভাবে গোলাম ফারুক অভি অভিযুক্ত হলেও পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি। অভির অনুপস্থিতিতেই ২০১০ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তিন্নি হত্যা ও মরদেহ গুম সংক্রান্ত মামলায় অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আলোচিত এ হত্যা মামলায় রায় ঘোষণার জন্য ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর দিন ঠিক ছিল। তবে সেদিন মামলার গুরুত্বপূর্ণ দুই সাক্ষী তিন্নির বাবা ও চাচা সাক্ষ্য দিতে চাইলে আদালত রায় ঘোষণা না করে ফের সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য করেন।

দশ ট্রাক অস্ত্র আইনের মামলাতেও খালাস বাবর

আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। আসামির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও আইনজীবী শিশির মনির ।

ডাটা ও মিনিট ইস্যুতে মোবাইল অপারেটরগুলোকে আইনি নোটিশ

মেয়াদ শেষে অবশিষ্ট থাকা ইন্টারনেট ডাটা, মিনিট এবং এসএমএস পরবর্তী প্যাকেজে যুক্ত না করার বিষয়ে মোবাইল অপারেটরদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মিজানুর রহমান এই নোটিশ পাঠিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, বাংলালিংক ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডসহ সংশ্লিষ্ট মোবাইল অপারেটরদের। গত সোমবার পাঠানো নোটিশে বলা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে। বর্তমানে, গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক এবং টেলিটক ব্যবহারকারীরা যখন তাদের প্যাকেজের মেয়াদ শেষ করে ফেলেন, তখন অব্যবহৃত ডেটা ব্যবহার করতে পারেন না। এছাড়া, প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নতুন প্যাকেজ না কিনলে তারা আগের প্যাকেজের অবশিষ্ট ডেটা ব্যবহার করতে পারেন না।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদার আপিলের রায় বুধবার

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আপিল আবেদনের ওপর শুনানির শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি শেষে রায়ের জন্য বুধবারের দিন ধার্য করেন। এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা বাড়িয়ে হাইকোর্টের দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আপিলের পরবর্তী শুনানির জন্য ১৪ জানুয়ারি দিন ঠিক করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। রাষ্ট্রপক্ষ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও খালেদা জিয়ার পক্ষে একে একে তিন দিন শুনানির পর দেখা যায় এই মামলার এক আপিলকারী কাজী সালিমুল হক কামালের পক্ষে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে কামালের পক্ষে সারসংক্ষেপ জমার দেওয়ার জন্য তার আইনজীবী সময় চাইলে আপিলের পরবর্তী শুনানির জন্য আজকে পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত। আদালতে ওইদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, জাকির হোসেন ভূঁইয়া ও মাকসুদ উল্লাহ প্রমুখ। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনির আর হক। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মো. আসিফ হাসান। এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) ১১ নভেম্বর মঞ্জুর করে ১০ বছরের কারাদণ্ড স্থগিতের আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত। একই বছরের ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধি চেয়ে দুদকের করা আবেদনে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এরপর সাজা বৃদ্ধিতে দুদকের আবেদনে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ খালেদা জিয়ার সাজা পাঁচ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করেন।

ড. ইউনূসের পাঁচ মামলা বাতিলের রায়ে আইনি দুর্বলতা পায়নি আপিল বিভাগ

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইনে করা পাঁচ মামলার কার্যক্রম বাতিলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে কোন আইনি দুর্বলতা ও হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে আদেশে উল্লেখ করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে আইনজীবী মুস্তাফিজুর রহমান খান শনিবার (১১ জানুয়ারি) আদালতের আদেশের বিষয়টি জানান। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের ‘লিভ টু আপিল’ খারিজ করে গত ৮ ডিসেম্বর আদেশ দেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির আপিল বিভাগ। ওই পূর্ণাঙ্গ আদেশ সম্প্রতি প্রকাশ হয়। আপিল বিভাগের এই আদেশে বলা হয়েছে, ‘হাইকোর্টের রায় ও আদেশে কোন আইনি দুর্বলতা এবং আইনিভাবে হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সে অনুসারে লিভ টু আপিলগুলো (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) খারিজ করা হল।’ মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে যখন শ্রম আদালতে পৃথক পাঁচটি মামলা হয়, তখন তিনি গ্রামীণ টেলিকমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রস্তাবিত ট্রেড ইউনিয়ন ঘিরে কর্মীর চাকরিচ্যুতির অভিযোগ তুলে ২০১৯ সালে মামলাগুলো করা হয়। সেই মামলার কার্যক্রম বাতিল চেয়ে ২০২০ সালে হাইকোর্টে পৃথক আবেদন করেন মুহাম্মদ ইউনূস। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেয়। সেসব রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গেল ২৪ অক্টোবর হাইকোর্ট রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে মামলাগুলোর কার্যক্রম বাতিলের রায় দেয়। হাইকোর্টের সে রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক পাঁচটি ‘লিভ টু আপিল’ করে। শুনানি শেষে সেই ‘লিভ টু আপিল’গুলো খারিজ করে গত ৮ ডিসেম্বর আপিল বিভাগ আদেশ দেয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে এডভোকেট মুস্তাফিজুর রহমান খান শুনানি করেন।

হাইকোর্টে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে স্লিপ গ্রহণ সিস্টেম চালু

বিচারপতি মো.আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের সমন্বয় গঠিত বেঞ্চে এ সিস্টেম চালু হয়েছে। শুক্রবার ( ১০ জানুয়ারি) বেঞ্চটির সহকারী বেঞ্চ অফিসার মো. মনিরুজ্জামান জানান, মোবাইল নম্বর-০১৭৩১৮৪০৩১১ (হোয়াটসঅ্যাপে) স্ক্যান করে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে মোশন, সময় বর্ধিতকরণ এবং দরখাস্তের স্লিপ স্ক্যান করে পাঠাতে হবে। আইনজীবীদের সুবিধার্থে কোর্ট চলাকালীন এ সুযোগ থাকছে। এ সংক্রান্ত বিশেষ নোটিশে বলা হয়েছে, কোর্টে কোনো প্রকার স্লিপ গ্রহণ করা হবে না। প্রতি রোববার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সব স্লিপ গ্রহণ করা হবে। মেনশন স্লিপে বিজ্ঞ অ্যাডভোকেটদের আইডি নম্বরসহ মোবাইল নম্বর উল্লেখ করতে হবে। বেঞ্চের কার্যক্রম শুরু হলে মোশন, সময় বর্ধিতকরণ এবং দরখাস্তের স্লিপ দেওয়ার জন্য আইনজীবীরা পর্যায়ক্রমে আদালতে মেনশন করে থাকেন। নতুন এ সিস্টেম বা পদ্ধতি চালু একটা ইতিবাচক ও আধুনিক উদ্যোগ। এতে আদালতের সময় বাঁচবে এবং মামলা শুনানি ও নিষ্পত্তি বাড়বে। আইনজীবীরা বলেছেন, এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ।

১৬ বছরে ২২৭৬ নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগ বিএনপির

২০০৮ সাল থেকে গত বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত দুই হাজার ৪২৯ নেতাকর্মীকে গুম খুন ও ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে অভিযোগ দাখিল করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং গুম, খুন, মামলা বিষয়ক সমন্বয়ক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই অভিযোগ দায়ের করেন।পরে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ইলিয়াস আলিসহ ২০০৮ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের ২ হাজার ২৭৬ জনকে ক্রসফায়ারে হত্যা ও ১৫৩ জনকে গুমের অভিযোগ দায়ের করেছি।বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে এই আবেদন দাখিল করেছেন তিনি।

পুলিশকে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ‘‌‌দুই তলায় বলে চার তলায় উঠাইতেছেন, ফাজলামি পাইছেন?’

‘আদালতের লিফট কি নষ্ট? এত উপরে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটানো হচ্ছে কেন, ফাজলামি? দুই তলায় বলে চার তলায় উঠাইতেছেন। ইতরামির একটা সীমা আছে।’ ঢাকার লালবাগ থানার মো. আলী হত্যা মামলায় গ্রেফতার শুনানিতে আদালতের এজলাসে লিফটে না তুলে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়ায় চটে গিয়ে নিরাপত্তাদানকারী পুলিশ সদস্যদের এভাবেই ঝাড়লেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। কামরুল ইসলাম, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পাঁচজনকে হত্যা মামলায় আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল নয়টার আগেই প্রিজন ভ্যানে করে আদালতে আনা হয়। এরপর তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। কিছুক্ষণ পর বিভিন্ন থানার হত্যা মামলার শুনানির জন্য তাদের এজলাসে তোলা হয়। এ সময় নিরাপত্তা দিতে সারিবেঁধে পুলিশ হাজতখানা থেকে কোর্টের সিঁড়ি পর্যন্ত ব্যারিকেড তৈরি করে। পরে কামরুল, পলক, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ পাঁচজনকে মাথায় হেলমেট, হাতে হাতকড়া আর বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে সরাসরি আদালতে তোলা হয়। কিন্তু আদালতের সিঁড়ি দিয়ে তোলার সময় বাঁধে বিপত্তি। আদালতের লিফটে না তুলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চার তালায় তোলা হয় তাদের। এ সময় আসামিদের নিরাপত্তাদানকারী পুলিশ সদস্যদের ওপর চটে যান কামরুল ইসলাম। তখন ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে চিৎকার করে কথা বলেন তিনি। পরে কামরুল ইসলামকে পুলিশ সদস্যরা সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠার সময় হাত ধরে সহায়তা করেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকদের প্রশ্নে জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারকীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘লিফটের সামনে অনেক সময় বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ, আইনজীবীদের ভিড় থাকে। তাই, নিরাপত্তার স্বার্থে, কোন রকম ঝামেলা এড়াতে অনেক সময় সিঁড়ি দিয়ে তোলা হয়।’ রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘আর আদালতে এলেই তিনি পুলিশের সাথে ঝগড়া করেন। কখনো আইনজীবীদের সঙ্গে ঝগড়া বাধান। আবার কখনো উচ্চবাচ্য বক্তব্য দেন। এটা ওনার স্বভাবজাত অভ্যাস।’ প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের গুলিতে নিহত হন মো. আলী। এ ঘটনায় লালবাগ থানার একটি হত্যা মামলা তারা আসামি।

নতুন মামলায় গ্রেপ্তার কামরুল-পলকসহ ৫ জন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে নতুন মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাবেক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।অন্যরা হলেন—সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুবলীগ নেতা নজরুল ইসলাম কবিরাজ ও আবুল হোসেন। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পৃথক এ মামলাগুলো করা হয়েছে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে আসামিদের কারাগার থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর রাজধানীর পৃথক পৃথক থানার মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন সংশ্লিষ্ট থানার তদন্ত কর্মকর্তারা। বিচারক জিয়াদুর রহমান তাদের এ আবেদন মঞ্জুর করেন। জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী ও ভাষানটেক থানার দুটি হত্যা মামলায় চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, লালবাগ থানার মোহাম্মদ আলী হত্যা মামলায় কামরুল ইসলাম, আবুল হোসেন ও নজরুল ইসলাম কবিরাজ এবং কাফরুল থানার সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় জুনাইদ আহমেদ পলককে নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বিচারক নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য: পিপির নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা

আদালত ঘেরাওয়ের হুমকি ও নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলামকে নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ার ঘটনায় হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন নওগাঁর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবু জাইদ মো. রফিকুল ইসলাম। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরী হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হয়ে তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। গত ১৮ ডিসেম্বর আদালত ঘেরাওয়ের হুমকি ও নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলামকে নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে প্রসিকিউটর (পিপি) আবু জাইদ মো. রফিকুল ইসলামকে তলব করেন হাইকোর্ট। ফারাহ মাহবুব ও দেবাশীষ রায় চৌধুরী হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আদালত অবমাননার রুলসহ এ আদেশ দেন। এর আগে রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর ‘বিজ্ঞ পাবলিক প্রসিকিউটর, নওগাঁ কর্তৃক প্রকাশ্যে নওগাঁ ম্যাজিস্ট্রেটি তথা বিচার বিভাগ নিয়ে আদালত অবমাননাকর বক্তব্য প্রসঙ্গে’ শীর্ষক একটি আবেদন পাঠান সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল ইসলাম। এতে প্রতি সই করেন সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট। পরে আবেদনটি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হলে আদালত অবমাননা সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুসারে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে আদালত আদেশ দেন। আদেশের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান।

গুমের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

গত ১৫ বছরে গুমের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গ্রেফতার করে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্যদের মধ্যে আছেন- শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। শুনানিতে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের সংস্কৃতি চালু করে আওয়ামী লীগ। যারা গুম করতেন তাদেরকে পুরস্কৃত করা হতো। র‌্যাব, ডিবি, সিটিটিসি, ডিজিএফআই সবচেয়ে বেশি গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল বলেও জানান চিফ প্রসিকিউটর। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সেই ট্রাইব্যুনাল জামায়াত-বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করা হয় এবং তা কার্যকরও হয়। মাঝখানে ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ অনেক দিন বন্ধ ছিল। এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যা চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মধ্যে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালেও পরিবর্তন আনা হয়। এরপর বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠনের অনুমোদন দেয় আইন মন্ত্রণালয়। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা গত ১৫ অক্টোবর থেকে বিচারিক কাজে যোগ দেন। ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েক ডজন মানুষের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এরইমধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। বিচারকাজ শুরু হলে সেগুলোর ওপর শুনানি হচ্ছে। ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শুরু হলে শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এবার আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামলে গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

তারেক রহমানের চার মামলা বাতিলের রায় আপিলেও বহাল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা চাঁদাবাজির চারটি মামলা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপিল বিভাগেও বহাল রাখা হয়েছে। রোববার (৫ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের দায়ের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক। এর আগে গতকাল রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। সেই আপিল অনুযায়ী আজকে আপিল বিভাগে মামলাগুলো সকালেই শুনানি করা হয়। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাজধানীর গুলশান, কাফরুল, শাহবাগ ও ধানমন্ডি থানায় বিভিন্ন ব্যক্তি বাদী হয়ে এসব মামলা করেন। মামলা দায়েরের বৈধতার প্রশ্নে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ (ক) ধারায় আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। গত ২৩ অক্টোবর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা চারটি মামলা বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। আবেদনে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, মামলা বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন তা সঠিক হয়নি।

তারেক রহমানের চার মামলা বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত চাঁদাবাজির চারটি মামলা বাতিল করেন হাইকোর্ট। মামলা বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। কাল রোববার (৫ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রাষ্ট্রপক্ষের এসব আবেদন শুনানির জন্য কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চে এসব আবেদনের ওপর শুনানি হবে। আবেদনে রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, ‘মামলা বাতিল করে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন তা সঠিক হয়নি।’ গত ২৩ অক্টোবর বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত চারটি মামলা বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে বিভিন্ন ব্যক্তি বাদী হয়ে গুলশান, কাফরুল, শাহবাগ ও ধানমন্ডি থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এসব মামলা করা হয়। মামলা দায়েরের বৈধতার প্রশ্নে হাইকোর্টে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬১ (ক) ধারায় আবেদন করা হয়।

প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যাচ্ছেন আরও ৫০ বিচারক

ভারতের ভূপালে ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি এবং স্টেট জুডিসিয়াল একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য অধস্তন আদালতের আরও ৫০ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাকে অনুমতি দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। অনুমতিপ্রাপ্ত বিচারকরা আগামী ১০ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রশিক্ষণে অংশ নেবেন। সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ। প্রশিক্ষণের জন্য সহকারী জজ, সিনিয়র সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা ও জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১০ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি ভূপাল এবং একটি স্টেট জুডিসিয়াল একাডেমিতে অনুষ্ঠিতব্য প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের ৫০ জন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাককে অনুমতি দেওয়া হলো। প্রশিক্ষণের যাবতীয় ব্যয় ভারত সরকার বহন করবে। এতে বাংলাদেশ সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের এপ্রিলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বাংলাদেশের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ও সামর্থ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমির মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ওই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর একই বছরের ২৯ জুলাই এক অনুষ্ঠানে তত্কালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছিলেন, পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশে উচ্চ আদালতের বিচারকদের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা আছে। ভারতের প্রত্যেকটা রাজ্যে একটি জুডিসিয়ারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আছে উচ্চ আদালতের বিচারকদের ট্রেনিংয়ের জন্য। ভূপালে তাদের জাতীয় জুডিসিয়ারি একাডেমি আছে। সেখানে আমাদের ১৫-১৬শ বিচারকের ট্রেনিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এরপর প্রথমবারের মতো ওই বছরের ১০ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ নিতে ভারতে যান বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা। পর্যায়ক্রমে ইতোমধ্যে অনেক বিচারক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এ চুক্তি আওতায়।

চিন্ময় দাসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ

বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি নামঞ্জুর করেছেন আদালত। ফের তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম আদালতে তোলা হয় চিন্ময় দাসকে। পরে শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।চিন্ময়ের শুনানি কেন্দ্র করে এদিন সকাল থেকেই আদালতের প্রবেশমুখে সতর্ক অবস্থানে ছিলেন পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) সদস্যরা । নিরাপত্তা জোরদার করা হয় আদালত প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায়।এর আগে, গত ৩ ডিসেম্বর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত থাকলেও আসামিপক্ষের কেউ ছিলেন না। তাই আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে আজ পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেছিলেন।অন্যদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তবে তিনি ভারত থেকে কবে বাংলাদেশে ফিরবেন তা নিয়ে রয়েছে ধুম্রজাল।এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আজ বাংলাদেশে ফিরে চিন্ময়ের পক্ষে আদালতে দাঁড়াবো। এর আগেই বাংলাদেশে যাব। তবে কিছুক্ষণ পর তিনি তার ওই বক্তব্য থেকে খানিকটা সরে এসে বলেছিলেন, আমি এখন চিকিৎসাধীন রয়েছি। ডাক্তার যেদিন সুস্থ বলবেন সেদিন বাংলাদেশে যাব। আমি না থাকলেও অন্য আইনজীবীরা দাড়াবেন। তবে সুস্থ্ থাকলে অবশ্যই যাব।আজ আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী হিসাবে উপস্থিত ছিলেন অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য। তিনি সাবেক ডেপুটি এটর্নি জেনারেল।

থার্টি ফার্স্টে বাসা-বাড়ির ছাদে আতশবাজি ফোটানো বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট

থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাজধানীর বাসা-বাড়ির ছাদ ও সব ভবন, উন্মুক্ত স্থান, পার্কে আতশবাজি-পটকা ফুটানো বন্ধ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান এ রিট দায়ের করেন। জানা যায়, বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হবে। স্বরাষ্ট্র সচিব, আইজিপি, ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়। রিটে জনসমাগম ও আতশবাজি ঠেকাতে ওই দিন রাত ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারির মতো কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

ইসলামী বক্তা ফারুকী হত্যা: ১০ বছর পর ৬ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল

১০ বছর পর আলোচিত ইসলামী বক্তা নুরুল ইসলাম ফারুকী হত্যা মামলায় ছয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার কে এম আবুল কাশেম গত ৫ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট জমা দেন। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) আদালত সূত্রে চার্জশিট জমা দেয়ার বিষয় জানা গেছে। যদিও তদন্তে ১২ জনের সম্পৃত্ততা খুঁজে পান তদন্ত কর্মকর্তা। কিন্তু এদের মধ্যে ছয় জনের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া, সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় আরও ছয়জনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন পুলিশকর্তা আবুল কাশেম। চার্জশিটভূক্ত আসামিরা হলেন- হাদিসুর রহমান ওরফে সাগর, আব্দুল্লাহ আল তাসনিম নাহিদ, রফিকুল ইসলাম ফারদীন,আবু রায়হান মাহমুদ আব্দুল হাদী, মাহমুদ ইবনে বাশার, রতন চৌধুরী ওরফে ইঞ্জিনিয়ার রিপন ওরফে রাকিবুল ইসলাম রিয়াজ। ফারুক, নাঈম, ইমন, হাফেজ কবির, আশফাক ই আজমদ ও খোরশেদ আলমদের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগ সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হলেও তাদের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা না পাওয়ায় অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। তবে একই ঘটনায় বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের পক্ষে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার করা পিটিশন মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়ায় ইসলামী বক্তা তারেক মনোয়ারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ছয়জন উপস্থাপককে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। এরা হলেন-মুফতি কাজী মো. ইব্রাহীম, কামাল উদ্দিন জাফরী, আরকানুল্লাহ হারুনী, খালেদ সাইফুল্লাহ বখশী ও মুখতার আহম্মদ। ২০১৪ সালের ২৭ আগস্ট রাত ৯টার দিকে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের বাসায় মাওলানা নুরুল ইসলাম ফারুকীকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ফারুকী নিহতের ঘটনায় তার ছেলে ফয়সাল ফারুকী শেরেবাংলা নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে নুরুল ইসলাম ফারুকীর বাসায় কলিং বেল চাপ দেয় দুর্বৃত্তরা। বাসার দরজা খুললে দুই জন লোক বাসায় প্রবেশ করে নুরুল ইসলামের সাথে ড্রয়িং রুমে বসে। এর কিছুক্ষণ পর আরও ৬/৭ লোক বাসায় প্রবেশ করে। বসার স্থান সংকুলান না হওয়ায় ফয়সাল ফারুকীর মামাতো ভাই মারুফ হোসেন ভেতর থেকে চেয়ার আনতে যান। সে ফিরে এসে দেখে নুরুল ইসলামের মাথায় পিস্তল ও চাপাতি ধরে রেখেছে আসামিরা। পরে তারা বাসার সবাইকে বেঁধে নুরুল ইসলাম ফারুকীতে হত্যা করে। আসামির বাসা থেকে নগদ টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার, ক্যামেরা নিয়ে যায়। নিহত ফারুকী চ্যানেল আইয়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান ‘কাফেলা’ ও ‘শান্তির পথে’, মাই টিভির লাইভ অনুষ্ঠান ‘সত্যের সন্ধানে’ এর উপস্থাপক ছিলেন। এছাড়া,তিনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্পাদক, সুপ্রিম কোর্ট জামে মসজিদের খতিব ছিলেন।

হাসিনাসহ নয়জনের বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ মাইকেল চাকমার

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে নয়জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গুমের লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন মাইকেল চাকমা। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে ট্রাইব্যুনালে গিয়ে অভিযোগ দেন তিনি। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর পাঁচ বছর গুম করে রাখার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে মৌখিকভাবে অভিযোগ জমা দেন মাইকেল চাকমা। ওই অভিযোগ আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনাল তদন্ত শুরু করে। মাইকেল চাকমা ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা। মৌখিক অভিযোগ করার পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মাইকেল চাকমার অভিযোগ আমলে নিয়েছি। শিগগির তার অভিযোগের তদন্ত শুরু করব।’ এর আগে আওয়ামী লীগ শাসনামলে গুমের শিকার ইউপিডিএফের এ নেতা দায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে ট্রাইব্যুনালে যান। মাইকেল চাকমার সঙ্গে ছিলেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম ও তার স্ত্রী অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ। মৌখিক অভিযোগের পর মাইকেল চাকমা বলেন, রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে সাদা পোশাকধারী অন্তত সাত-আটজন আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। তারা চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তোলে। আমি গাড়ির ভেতর একটি ওয়াকিটকি শনাক্ত করতে পেরেছিলাম। প্রথমে তারা আমাকে একটি কক্ষে আটকে রাখে এবং পরে আরও দুটি কক্ষে নিয়ে যায়, যেখানে নির্যাতন করা হয়। ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার খাগড়াছড়ির সমাবেশে অংশ নেওয়ার সময় কেন সড়ক অবরোধ করা হয়েছিল, তারা আমাকে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল সাংগঠনিক কাজ শেষে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মাইকেল চাকমা গুমের শিকার হন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরাও উদ্বেগ প্রকাশ করে তার সন্ধান দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানায়। হাইকোর্টে রিট করা হলেও তাকে উদ্ধারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বিগত সরকার।

হত্যা মামলায় ইনু ফের চার দিনের রিমান্ডে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাহাদুর হোসেন মনির নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর গুলশান থানায় করা মামলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ইনুকে আদালতে উপস্থিত করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক আবু জাফর বিশ্বাস। অন্যদিকে আসামির রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শরীফুর রহমান আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আজ শুনানিতে ইনুর আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, রাজনৈতিক কারণে হাসানুল হক ইনুকে হয়রানি করার জন্য এ মামলায় আসামি করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। এ মামলায় রিমান্ড না দেওয়ার অনুরোধ করছি, প্রয়োজনে জেলগেট জিজ্ঞাসাবাদ দেন। অন্যদিকে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ইনু এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ইনুদের মতো ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের ইন্ধনে শেখ হাসিনা এত বড় গণহত্যা চালিয়েছেন। তাই তার রিমান্ড প্রার্থনা করছি। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ জুলাই গুলশান থানাধীন প্রগতি সরণিতে আন্দোলন চলাকালে মনির রাস্তা পার হয়ে বাসায় যাওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন। পরে মনিরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর নিহতের বাবা মো. আবু জাফর রাজধানীর গুলশান থানায় শেখ হাসিনাসহ ১০৫ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা নেই খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের

সব মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক ছায়া সংসদে এ কথা বলেন তিনি।অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলটির নেতারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে আপাতত সব মামলার নিষ্পত্তি হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণে কোনো আইনি বাধা নেই।তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে নানা অনিয়মের কারণে পূর্বের গণপ্রতিনিধি আইন অনুযায়ী দলটির নির্বাচনী অপরাধীদের বিচার করা হবে।এ সময় মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কোনো ষড়যন্ত্রের কাছে জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হতে পারে না। ষড়যন্ত্রকারীরা যত শক্তিশালীই হোক না কেন, এ বিপ্লব মুছে ফেলা যাবে না।অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, হাসিনার নির্মম পরিণামের পর তার পাশে দলের কেউ দাঁড়াতে সাহস পাচ্ছে না। যারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল, সংবিধান কেটে-ছিঁড়ে মানুষের অধিকার ভূলুণ্ঠিত করেছিল, তারা ইতিহাসের খলনায়ক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে চিরদিন ক্ষমতায় রাখার অসৎ উদ্দেশে সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার রায় জালিয়াতির দায়ে খায়রুল হকের গ্রেপ্তার ও বিচার সময়ের দাবি।তিনি আরও বলেন, এ দেশে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল পতিত আওয়ামী সরকার। ডামি, একতরফা ও মধ্যরাতের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। গত তিনটি নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন, পুলিশ, রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসারসহ নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সবাই জাল-জালিয়াতির অপরাধে অপরাধী। যারা এসব নির্বাচনী অপরাধ করেছে, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সাবেক মন্ত্রী কামরুল ও সাংসদ সোলায়মান কারাগারে

বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদলের নেতা শামীম হত্যা মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সাংসদ সোলায়মান সেলিমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) তাদের দুইজনকে রিমান্ড শেষে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাদের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক ফেরদৌস জামান। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী এর বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর তাদের দুইজনকে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী মহাসমাবেশ ডাকে। এই মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। এতে অনেক বিএনপির নেতা কর্মী আহত হন। যুবদলের নেতা শামীম মারা যায়। এ ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।