ছয় লাশ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার মামলা

সাবেক এমপি সাইফুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ আজ


সাবেক এমপি সাইফুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোসহ সাতজনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ ১৬ আসামির বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ১৬তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রমটি পরিচালনা করছেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। তার সঙ্গে আরও আছেন সদস্য বিচারপতি অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

আজকের কার্যদিবসে দুইজন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেবেন। এর আগে বুধবার (২৯ অক্টোবর) আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আশরাফুল হাসান জব্দতালিকার সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। তিনি জানান, চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল থানার ওসির নির্দেশে তিনি রাইফেলের ছয় রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পলাতক আট আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ও অন্যান্য আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। এখন পর্যন্ত মামলায় মোট ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়েছে।

এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামির মধ্যে রয়েছেন ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল। অন্যদিকে সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন আসামি এখনও পলাতক রয়েছেন।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর মামলার প্রথম দিনের সাক্ষ্য দেন শহীদ আস সাবুরের ভাই রেজওয়ানুল ইসলাম এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের বাবা মো. খলিলুর রহমান। তার আগের দিন মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, যিনি গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত ওই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেন।

এ মামলায় গত ২১ আগস্ট ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। উপস্থিত আট আসামির মধ্যে সাতজন নিজেদের নির্দোষ দাবি করলেও এসআই শেখ আবজালুল হক দোষ স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন জানান। আদালত তার দোষ স্বীকারের অংশ রেকর্ড করে আবেদন অনুযায়ী রাজসাক্ষী হিসেবে অনুমতি দেয়।

প্রসিকিউশন গত ২ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয়, যেখানে ৩১৩ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র, ৬২ জন সাক্ষী, ১৬৮ পৃষ্ঠা দালিলিক প্রমাণ ও দুটি পেনড্রাইভ সংযুক্ত করা হয়। ট্রাইব্যুনাল পরে অভিযোগ আমলে নেয় এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে।

গত বছরের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ছয় তরুণ নিহত হন। পরে তাদের লাশ পুলিশ ভ্যানে তুলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই ভয়াবহ ঘটনার সময় একজন ভিকটিম তখনও জীবিত ছিলেন, কিন্তু তাকেও পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। এই নির্মম ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা দায়ের করা হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×