সাদেক এগ্রোর ইমরান কারাগারে


March25 Naeem/image_169034_1741084257.webp

১৩৩ কোটি টাকা পাচারে মোহাম্মদপুর থানার মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় সাদেক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন ইমরান হোসেনকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. ছায়েদুর রহমান কারাগারে রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামি নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

গতকাল ৩ মার্চ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি অনুযায়ী ১৩৩ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে সাদিক এগ্রোর মালিক ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক এগ্রোসহ অজ্ঞাতনামা ৫ থেকে ৭ জনের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিটের উপপরিদর্শক মো. জোনাঈদ হোসেন।

এ মামলায় সোমবার (৩ মার্চ) তাকে গ্রেফতার করে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) পুলিশ।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ২০১৭ সালে ১২ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ইমরান হোসেন, তৌহিদুল আলম জেনিথ ও অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান সাদিক এগ্রো লিমিটেড সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের মাধ্যমে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি ও সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বিদেশে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা পাচার করে। টেকনাফ ও উখিয়া, কক্সবাজার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার হতে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয় এবং ভুটান ও নেপাল হতে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে নিয়ে এসে বিক্রি করে। প্রতারণার মাধ্যমে দেশীয় গরু/ছাগলকে বিদেশি ও বংশীয় গরু-ছাগল বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে তা কোরবানির পশুর হাটে বিক্রি করে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে প্রায় ১২১ কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার ১৪৪ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে। ঢাকার কাস্টমস হাউজ আটক করা এবং সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জবাই করে ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রয়ের কথা থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে সেগুলো জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে কৌশলে তা হাতিয়ে নিয়ে অনুমোদনহীনভাবে জোরপূর্বক মোহাম্মদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও জবর দখল করে। অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে এফডিআর খুলে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৯১ হাজার ২০০ টাকা বিনিয়োগ করে রূপান্তর করেছে। অর্থাৎ অভিযুক্তরাসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৭ জন সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের মাধ্যমে চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অনুমোদনহীন ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি, কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া, সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ এবং ভুটান ও নেপাল হতে চোরাচালানের মাধ্যমে আনা ছোট আকৃতির ভুট্টি গরু বাংলাদেশে নিয়ে এসে তা বিক্রয়, প্রতারণার মাধ্যমে দেশি গরু/ছাগল বিদেশি বলে প্রচার করে উচ্চমূল্যে কোরবানির পশু বিক্রয়, কাস্টমস হাউজ আটককৃত এবং কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামার, সাভার, ঢাকার হেফাজতে থাকা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক জবাই করে ন্যায্যমূল্যে মাংস বিক্রয়ের কথা থাকলেও জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্রে সেগুল্যে জবাই দেখিয়ে প্রতারণামূলকভাবে তা জবাই না করে কৌশলে হাতিয়ে নিয়ে। অনুমোদনহীনভাবে জোরপূর্বক মোহাম্মাদপুর থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও জবরদখল করে এবং সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচার করে ও অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ করে সর্বমোট প্রায় ১৩৩ কোটি ৫৫ লাখ ৬ হাজার ৩৪৪ টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছে। 

গত বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাতের কাছে ১৫ লাখ টাকার ছাগল বিক্রি নিয়ে বিতর্কের পর সাদিক অ্যাগ্রোর সমালোচনা শুরু হয়। পরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ বেশ কয়েকটি সংস্থা সাদিক অ্যাগ্রোর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অনিয়মের তদন্ত শুরু করে।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×