১৭ বিয়ের অভিযোগের সেই বন কর্মকর্তা রাতের আঁধারে পালানোর সময় আটক
- বরিশাল প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:০৩ এম, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বরিশাল বিভাগের সাবেক বন কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন পাটোয়ারীকে ১৭টি বিয়ে ও প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতের আঁধারে পালানোর সময় তাকে আটক করা হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কবির হোসেনকে গতকাল (১৬ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হয়েছে। কিন্তু রাতে তিনি বরিশাল ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয় ঠিকাদারসহ কয়েকজন তাকে বাধা দেয়। বাধার কারণে ঘটনাস্থলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়।
বাধাদানকারীরা অভিযোগ করেছেন, কবির হোসেন বিভিন্ন সময়ে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন, যা পরিশোধ না করেই তিনি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন।
পুলিশ জানায়, “বিশৃঙ্খলা এড়াতে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বাধাদানকারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
১৭ জন নারীকে বিয়ে করার অভিযোগে কবির হোসেনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একইদিন সকালে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উপ-বন সংরক্ষক) ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান মিঞা তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের গতকাল বিকালের প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা যায়। বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় বন সংরক্ষক মিহির কুমার দে জানিয়েছেন, মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি সংক্রান্ত একটি ই-মেইল পেয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে যে, মো. কবির হোসেন পাটোয়ারী নারীদের বিদেশে পড়াশোনা করানোর, সরকারি চাকরি দেওয়ার, বিমানবালার চাকরি এবং সম্পত্তি দানের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণা করে অন্তত ১৪ থেকে ১৭ জনকে বিয়ে করেছেন। এর প্রতিবাদে ১১ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী নারীরা বরিশাল নগরীর কাশিপুর বন সংরক্ষক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে ঢাকার নাজনীন আক্তার শীলা, নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার, খুলনার নাসরিন আক্তার দোলনসহ অনেকে রয়েছেন।
এ ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর বরিশালে এক আইনজীবী আদালতে মামলা করেন। বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মামলার বাদী অ্যাডভোকেট হাফিজ আহমেদ বাবলু জানিয়েছেন, কবির হোসেন পাটোয়ারী ঢাকার পাশাপাশি খুলনা, সিরাজগঞ্জ, বাগেরহাটসহ বিভিন্ন জেলায় কর্মরত অবস্থায় এই প্রতারণামূলক বিয়ের ঘটনাগুলো ঘটিয়েছেন।
আইনজীবী বলেন, কবির হোসেন মুসলিম ফ্যামিলি আইনের ১৯৬১ সালের ৬ ধারার বিধান লঙ্ঘন করেছেন এবং অধ্যাদেশ ৬(৫) এর (খ) ধারার আওতায় অপরাধ করেছেন। তিনি একের পর এক বিয়ে গোপন রেখে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী কাজ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে বক্তব্যের জন্য কবির হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।