মাওলানা নোমানীকে হত্যা করেছে তারই ছেলে, জানাল পুলিশ


মাওলানা নোমানীকে হত্যা করেছে তারই ছেলে, জানাল পুলিশ

নিজ বাড়িতে নির্মমভাবে খুন হওয়া ভোলার প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আমিনুল হক নোমানীর হত্যাকাণ্ডে তারই বড় ছেলে রেদোয়ানের সম্পৃক্ততার তথ্য প্রকাশ করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভোলা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শরিফুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের পর শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রেদোয়ানকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মাওলানা আমিনুল হক নোমানী ছিলেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ভোলা জেলা শাখার সেক্রেটারি। পাশাপাশি তিনি ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস এবং ভোলা সদর উপজেলার একটি কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

পুলিশ সুপার শরিফুল হক বলেন, "গত ৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার উত্তর চর নোয়াবাদ এলাকার নিজ বাড়িতে মাওলানা আমিনুল হক নোমানীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।"

তিনি আরও জানান, ঘটনার পর থেকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা হত্যাকারীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।

"দীর্ঘ তদন্ত শেষে শুক্রবার আমরা হত্যার মূল সূত্র খুঁজে পাই এবং এরপর নিহতের বড় ছেলে মো. রেদোয়ানকে গ্রেপ্তার করি," বলেন পুলিশ সুপার।

তদন্তে উঠে এসেছে, নিহত নোমানী ও তার ছেলে রেদোয়ানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। পুলিশ জানায়, মেধাবী হলেও রেদোয়ান তার বাবার কঠোর শাসনে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এ থেকেই তার মধ্যে ক্ষোভের জন্ম নেয়, যার পরিণতিতে সে দুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং শেষ পর্যন্ত বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

দুই মাস আগে রেদোয়ান তজুমদ্দিন উপজেলার তার মামাবাড়িতে গিয়ে ওঠেন। "গত ৫ সেপ্টেম্বর, তার মা যখন নানাবাড়ি বেড়াতে যান, তখন রেদোয়ান অনলাইনে একটি ধারালো ছুরি অর্ডার করে," বলেন এসপি শরিফুল হক।

হত্যার দিন অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর, রেদোয়ান তজুমদ্দিন থেকে ছুরি নিয়ে ভোলার নিজ বাড়িতে এসে পেছনের অংশে লুকিয়ে থাকে। ওই রাতে এশার নামাজ শেষে মাওলানা নোমানী বাসায় ফিরে কম্পিউটারে কাজ করছিলেন। এ সময় রেদোয়ান তাকে দরজা খুলতে বলে। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ছুরি দিয়ে তার বাবার ওপর আক্রমণ চালায় এবং তাকে হত্যা করে ঘরের পেছন দিয়ে পালিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার জানান, "তিনটি গোয়েন্দা সংস্থার যৌথ তদন্তে রেদোয়ানকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×