কক্সবাজারে দখলমুক্ত অভিযানে প্রশাসনকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, আহত পুলিশ সদস্য
- কক্সবাজার প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১২:৫৯ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত অভিযানে বিক্ষোভকারীদের বাধার মুখে পড়ে প্রশাসন। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে, যাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শহরের কস্তরাঘাট এলাকায় নদীর মোহনায় উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে এ ঘটনা ঘটে। আহত পুলিশ কনস্টেবল মো. করিম কক্সবাজার পুলিশ লাইনসে কর্মরত।
জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএর যৌথ অভিযানের শুরুতেই স্থানীয়রা বাধা দেয়। ‘বদরমোকামস্থ উকিলপাড়া সমাজের সর্বস্তরের জনসাধারণ’ ব্যানারে তারা বিক্ষোভে অংশ নেন। এসময় এক নারী অভিযোগ করেন, নদী উদ্ধারের নামে তাঁদের ক্রয়কৃত জমি দখল করে নেওয়া হচ্ছে।
পরে বিক্ষোভকারীরা ইটপাটকেল ছোড়লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কনস্টেবল করিম আহত হন এবং ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়।
জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, আহত পুলিশ সদস্যের মাথায় আঘাত লেগেছে, বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পর কিছু সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত হলে দুপুর ১২টার দিকে আবার উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ী আতিকউল্লাহ ওরফে সিআইপি আতিকের দখলকৃত স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, গত ২৪ আগস্ট হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় চার মাসের মধ্যে বাঁকখালী নদীর সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদী দূষণ রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে। এরই ধারাবাহিকতায় অভিযান পরিচালনা হচ্ছে।
এর আগে ৩০ আগস্ট কক্সবাজার সফরে গিয়ে নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন সংশ্লিষ্টদের হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে নির্দেশনা দেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশেই বাঁকখালী নদী দখলমুক্ত অভিযান চলছে। সব অবৈধ স্থাপনা সরানোর পর নদীর সীমানা নির্ধারণ করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএর তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী ৭২১ একর জমিকে নদীবন্দর ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ একর জায়গা অবৈধভাবে দখল হয়ে আছে।
বিআইডব্লিউটিএ কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. খায়রুজ্জামান বলেন, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই পাঁচ একরের বেশি জায়গা থেকে দুই শতাধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ অভিযান চলবে এবং প্রায় দুই হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।