খুলনার সাংবাদিক বুলুর মুখ থেতলানো, দুই হাত ভাঙা ছিল: পুলিশ
- খুলনা প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৭:১৮ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খুলনার সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী তার মুখ থেতলানো ছিল এবং দুই হাত ভাঙা ছিল বলে জানিয়েছেন রূপসা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মুহিদুল হক। সোমবার দুপুরে তিনি বলেন, “সুরতহাল প্রতিবেদনে সাংবাদিক বুলুর মুখ থেঁতলানো, দুই হাত ভাঙা ও গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের পর প্রকৃত তথ্য বলা সম্ভব হবে।”
রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রূপসা সেতুর নিচ থেকে বুলুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তার স্বজনরা মরদেহ শনাক্ত করেন।
৬০ বছর বয়সী সাংবাদিক বুলু চ্যানেল ওয়ান, ইউএনবি, আজকের কাগজ, বঙ্গবাণী, ও দৈনিক প্রবাহে সাংবাদিকতা করেছেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন-এর জ্যেষ্ঠ নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। খুলনা প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন আহ্বায়ক এনামুল হক জানান, বুলু খুলনা প্রেস ক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।
সোমবার ময়নাতদন্ত শেষে খুলনা প্রেস ক্লাবে বুলুর জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং পরে গোয়ালখালী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
বুলুর শ্যালিকা নুরুন্নাহার পারভীন জানান, রোববার সকালে তিনি বাসা থেকে বের হন এবং দুপুরের পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। রাতে মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে তারা গিয়ে তা শনাক্ত করেন।
তিনি ‘শিববাড়ি মোড়ের বুলু ভাই’ নামে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। তার বাসা ছিল শিববাড়ি মোড়ের কাছাকাছি, যদিও কয়েক বছর আগে সেই বাড়ি বিক্রি হয়ে যায় এবং বর্তমানে তিনি সেখানে থাকতেন না। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সেই বাড়ি নিয়ে নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিরোধ ছিল।
বুলু ছিলেন নিঃসন্তান। প্রায় চার মাস আগে তিনি ফেসবুকে জানান তার ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ স্ত্রী নিখোঁজ।
তার ছোট ভাই আনিসুজ্জামান দুলু বলেন, “পারিবারিকসহ নানান ঘটনায় বুলু ভাই চাপের মধ্যে ছিলেন। স্ত্রী তিন মাস নিখোঁজ। নারী সংক্রান্ত দুটি ঘটনায় তিনি মানসিক চাপে ছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “এসব চাপ থাকলেও তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।”
সাংবাদিক বুলুর বন্ধু কামরুল হোসেন বলেন, “ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তাতে বুলুর মৃত্যু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত জরুরি মনে করছি।”