সমস্যা মিয়ানমারে সৃষ্টি, সমাধানও সেখানেই: প্রধান উপদেষ্টা


সমস্যা মিয়ানমারে সৃষ্টি, সমাধানও সেখানেই: প্রধান উপদেষ্টা

রোববার (২৪ আগস্ট) কক্সবাজারে তিন দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘স্টেকহোল্ডারস ডায়ালগ: টেকঅ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শুরু হয়। রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে এ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ। 

এই সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে যোগদান করেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্মেলনের বক্তব্যে তিনি, রোহিঙ্গাদের জাতিগত নির্মূলের ভয়াবহ পরিকল্পনা  থামানো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন ।

রোববার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারের ইনানীতে  রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক অংশীজন সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে জাতিসংঘ, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, কূটনীতিক ও বিদেশি মন্ত্রীরা অংশ নিচ্ছেন।

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সীমিত সম্পদ ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ মানবিক কারণে ২০১৭ সালে এমনকি তারও আগে রোহিঙ্গাদের জীবন বাঁচাতে সীমান্ত উন্মুক্ত করেছিল।

তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয় হতে হবে। মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মিকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আর কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে।

রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ন্যায়বিচার ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে একটি ৭ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন।

ড. ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, “সমস্যা মিয়ানমারে সৃষ্টি, সমাধানও সেখানেই।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশ এখন স্থিতিশীল এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে দীর্ঘমেয়াদে রোহিঙ্গা সংকট কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের উপর বিশাল সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত চাপ সৃষ্টি করছে। স্থানীয়দের অসাধারণ আত্মত্যাগ ও মানবিক সহযোগিতার জন্যও স্থানীয়দের ধন্যবাদ জানান তিনি।

সম্মেলনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন, মানবিক সহায়তা ও তহবিল সংগ্রহের পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের মতামত ও অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেওয়া হয়। উখিয়া ও টেকনাফসহ কক্সবাজারবাসীর প্রত্যক্ষ ভোগান্তি এবং সংকট মোকাবেলায় তাদের সম্পৃক্ততা ছাড়া কোনো টেকসই সমাধান সম্ভব নয় বলেও আলোচনায় উঠে আসে।

রোহিঙ্গা সংকটের আট বছর পূর্তিতে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনকে ভবিষ্যৎ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রোহিঙ্গাবিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে মিয়ানমারে তাদের নিজ আবাসভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য দৃশ্যমান আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান এবং বাংলাদেশের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন।

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক), পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম, ইউএনএইচসিআরের সহকারী হাইকমিশনার রাউফ মাজুও বক্তব্য রাখেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×