উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের বিক্ষোভে ‘পুলিশের লাঠিপেটা’
- কক্সবাজার প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৪:০৪ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২৫
.png)
কক্সবাজারের উখিয়ায় চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামা শিক্ষকরা পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হয়েছেন। বুধবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার ফলিয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন চাকরিচ্যুত শিক্ষক সড়কের পাশে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি চালাচ্ছিলেন। এ সময় তারা রোহিঙ্গা শিবিরগামী বিভিন্ন এনজিও সংস্থার গাড়ি আটকে দিচ্ছিলেন। পুলিশ তাদের সরে যেতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্দেশ অমান্য করায় আন্দোলনকারীদের ওপর ‘লাঠিচার্জ’ শুরু হয়। এতে অন্তত তিনজন আহত হয়ে উখিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ঘটনায় জুলাই আন্দোলনের সমন্বয়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–এর ছাত্র সংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কক্সবাজার জেলা সংগঠক জিনিয়া এবং শিক্ষক প্রতিনিধি সাইদুল ইসলাম শামীমসহ অন্তত ২০ জনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম সুজা উদ্দিন। তিনি বলেন, জিনিয়া আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানাতে সেখানে গেছিল। উখিয়া কোনো আলাদা দেশ নয় যে এখানে আন্দোলন করা যাবে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং আটকদের সম্মানের সঙ্গে মুক্তি দিতে হবে।
স্থানীয় সাংবাদিক ইফতিয়াজ নূরও জানিয়েছেন, তিনি নিজ চোখে দেখেছেন পুলিশ অন্তত ২০ জনকে আটক করেছে।
তবে এ বিষয়ে উখিয়া থানার ওসি মো. অরিফ হোসেন, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জমিসউদ্দিনসহ প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর উখিয়া সদর এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
প্রসঙ্গত, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বহু বছর ধরে স্থানীয় বাংলাদেশি শিক্ষকরা শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু অর্থ সংকটের অজুহাতে গত জুলাইয়ে প্রায় দেড় হাজার স্থানীয় শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষকরা ধারাবাহিক আন্দোলন শুরু করেন। গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তারা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করেন, ফলে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে এবং যাত্রী–চালকরা ভোগান্তিতে পড়েন।
চাকরিচ্যুত শিক্ষকদের অভিযোগ, প্রশাসন বারবার সমাধানের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই তারা বাধ্য হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমানে উখিয়ার আশ্রয়শিবিরগুলোতে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি শিক্ষাকেন্দ্র চালু রয়েছে। এসব ‘লার্নিং সেন্টারে’ প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু পড়াশোনা করছে।