রাজশাহীতে ঋণের চাপে কৃষকের আত্মহত্যা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০১:১৩ পিএম, ১৮ আগস্ট ২০২৫

রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার খাড়ইল গ্রামে ঋণের বোঝায় অতিষ্ঠ হয়ে আকবর হোসেন (৫০) নামে এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তিনি ওই গ্রামের লোকমান হোসনের ছেলে। আত্মহত্যার আগে তিনি অন্তত ১১টি এনজিও ও স্থানীয় সুদ কারবারিদের কাছ থেকে ৬–৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন, যা পরিশোধ করতে না পারায় চরম হতাশায় পড়েন।
সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় তিনি নিজের পান বরজে গলায় ফাঁস দিয়ে জীবনটাকে সমাপ্ত করেন। নিহতের ছেলে সুজন শাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুজন বলেন, “আমার বাবা একটা এনজিও থেকে চার লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এবার পানের দাম নেই। এক বিঘা জমির পান বরজের আয়ের উপরই আমাদের সংসার চলে। ঋণের কিস্তি প্রতি সপ্তাহে ৫ হাজার টাকা। পানের দাম না থাকায় ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। এনজিওর লোকেরা প্রতিদিন চাপ দিত। এই ঋণের বোঝায় বাবা হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।”
সুজন আরও জানান, তাঁর বাবার ঋণ ছিল ব্রাক, আশা, প্রশিকা, ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার (ভার্ক), ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি), শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থা, রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টার (রিক), ইকো সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও), গ্রামীণ প্রচেষ্টা, পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি (পিএমকে) ও গ্রামীণ উন্নয়ন কেন্দ্র (গাক) নামের এনজিওতে।
মোহনপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, “আকবর হোসেনের পান বরজে লোকসান হওয়ার কারণে তিনি ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি। হতাশা থেকে তিনি নিজের পান বরজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।” নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
ওসি আরও বলেন, “নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এনজিওর নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা দায়ের করা যেতে পারে। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো মামলা দায়ের করা হবে না। ময়নাতদন্ত করতেও তারা রাজি নয়।”
নিহতের দুই ছেলে—সুজন শাহ (৩০) এবং সুমন শাহ (১৮)।
উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে মিনারুল নামে এক ব্যক্তি ঋণের চাপে ও খাদ্য সংকটের কারণে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে হত্যা করার পর চিরকুট রেখে আত্মহত্যা করেছিলেন।