রামগঞ্জে সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু, অ্যান্টিভেনম না পাওয়ার অভিযোগ


রামগঞ্জে সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু, অ্যান্টিভেনম না পাওয়ার অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বিষাক্ত সাপের কামড়ে আবদুল আলিম (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি, স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম না থাকায় কিংবা তা প্রয়োগ না করায় শিশুটির জীবন রক্ষা করা যায়নি।

মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটির মৃত্যু হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রামগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কলচমা চৌকিদার বাড়িতে দুপুর ১২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত আলিম একই এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে।

শিশুটির মা মহিমা আক্তার ও মামা রাছেল শেখ জানিয়েছেন, মাদরাসা থেকে ফিরে ঘরের দরজার সামনে বসে খেলছিল আলিম। হঠাৎ সে চিৎকার দিয়ে ওঠে। মা ছুটে গিয়ে দেখেন একটি সাপ কামড় দিয়ে পাশের গর্তে সরে গেছে। দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ফারজানা ইতি জানান, হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম মজুত নেই এবং দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পথেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

মহিমা আক্তার বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম দিলে আমার ছেলেটা বেঁচে যেতো। কিন্তু অ্যান্টিভেনম না দেওয়ায় তাকে বাঁচানো যায়নি।”

শিশুর মামা মো. রাছেল শেখ বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাপে কাটা রোগীর জন্য অ্যান্টিভেনম নাই, এটা আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। মূল্যবান অ্যান্টিভেনম হয়তো রোগীদের না দিয়ে অন্যত্রে বিক্রি করে দেয়। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

তবে চিকিৎসকের দাবি, শিশুটিকে হাসপাতালে আনার পর প্রাথমিকভাবে মা নিশ্চিত করতে পারেননি এটি সাপে কাটা, না ব্যাঙের কামড়। ফারজানা ইতি বলেন, “১২টার পর শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও শিশুটির মা বলতে পারেননি তাকে সাপে কেটেছে, নাকি ব্যাঙ কামড় দিয়েছে। আমার সন্দেহ হলে তার রক্ত পরীক্ষা করে নেগেটিভ রেজাল্ট পাই। এছাড়া শিশুটির স্বজনদের অ্যান্টিভেনমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শ্বাস প্রশ্বাস কমের উপসর্গ দেখা দিতে পারে জানালে, তারা শিশুটিকে অন্যত্র চিকিৎসা করানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করে। এতে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ তাকে পাঠানো হয়। তাদের অভিযোগ সঠিক নয়। আমাদের কাছে অ্যান্টিভেনম থাকার পরও কেন দেব না?”

এ বিষয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, “এরকম হওয়ার কথা না। আমাদের হাসপাতালে যে অ্যান্টিভেনম আছে, তা দিয়ে চারজন রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া যাবে। অন্য কোথাও রোগীকে রেফার্ড করতে হলেও অবশ্যই তাকে অ্যান্টিভেনম দিয়েই রেফার্ড করতে হবে। কিন্তু কি কারনে ওই চিকিৎসক অ্যান্টিভেনম দেয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×