স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ


স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

লক্ষ্মীপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মো. হাসান নামের স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়, এক লাখ টাকা যৌতুক না পাওয়ায় হাসান তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে (২৬) হত্যা করেন। ঘটনার পর হাসানকে পুলিশ হেফাজতে নিলেও পরে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকনের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশ মামলা গ্রহণে টালবাহানা করছে।

রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে ফাতেমার বাবার বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন স্বজনরা। অভিযুক্ত হাসান টুমচর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক এবং কালিচর গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহজাহানের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন নিহত ফাতেমার বাবা আবুল খায়ের, মা মরিয়ম বেগম, ভাই আবু হেনা এবং স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন।

ফাতেমার ভাই আবু হেনা অভিযোগ করে বলেন, “সাত বছর আগে হাসান আমার বোনকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের তিন মাস পর থেকেই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করে। তাদের সংসারে দুটি মেয়ে ও ছয় মাস বয়সী এক ছেলে রয়েছে। গত বুধবার (৬ আগস্ট) বোন শ্বশুরবাড়ি যায়। তখন হাসান আমাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা চায়। আমরা দিতে না পারায় সে আমার বোনকে মেরে ফেলে। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করে। হাসান পরকীয়ায় লিপ্ত ছিল, ভিডিও কলে অন্য মেয়ের সঙ্গে কথা বলত—এসব আমার বোন আমাকে জানিয়েছে।”

ফাতেমার পরিবার ও স্থানীয়রা দাবি করেন, হাসান পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

অভিযোগের বিষয়ে মো. হাসান বলেন, “আমি ফাতেমাকে হত্যা করিনি। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছে।”

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন বলেন, “থানায় দুই পক্ষের লোকজন ছিল। পরে পুলিশ তাকে আমার জিম্মায় ছেড়ে দেয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরূপ পাল জানান, “বৃহস্পতিবার ভোরে ফাতেমাকে হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুপুরে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, “হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তাকে শুধুমাত্র জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। পরে দুই পক্ষের উপস্থিতিতে তাকে যুবদল নেতা লিংকনের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×