পোস্টার অপসারণের কারণে ইউএনওকে হুমকি বিএনপি নেতার
- রাজশাহী প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:২৪ পিএম, ৩১ জুলাই ২০২৫

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সড়ক বিভাজক থেকে একটি ফেস্টুন অপসারণকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদের প্রতি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপি নেতা কে এম জুয়েল। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল এই ঘটনায় সরাসরি ইউএনওকে ফোন করে সাবেক অবস্থানে ফেস্টুন পুনঃস্থাপনের নির্দেশ দেন এবং কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
স্থানীয় রিশিকুল ইউনিয়নের বাসিন্দা কে এম জুয়েল ফোনালাপে দাবি করেন, অপসারিত ফেস্টুনে তাঁর ও দলের নেতাদের ছবি ছিল এবং কোনো বৈধ নির্দেশনা ছাড়াই এগুলো সরানো হয়েছে। মঙ্গলবার গোদাগাড়ী উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক দলের ফেস্টুন সরানোর সময় এই ঘটনা ঘটে। ইউএনও ফয়সাল আহমেদ তখন জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে পৌরসভার উদ্যোগে ব্যানার ও ফেস্টুন অপসারণ করা হয়েছে।
ফোনালাপে জুয়েল ইউএনওকে উদ্দেশ করে বলেন, আজকে একটা ঘটনা ঘটেছে, আমি শুনেছি। আমি ইঞ্জিনিয়ার কেএম জুয়েল বলছি, সম্ভাব্য ক্যান্ডিটেট... আপনি কেন ওই জায়গার পোস্টার তুলেছেন, আর অন্য জায়গার তুলছেন না কেন? আমি ঢাকাতে আছি, আমি আসতেছি।
তিনি আরও বলেন, কালকে যেন আমরা ওখানে দেখতে পাই, পোস্টার যেখানে ছিল। ঠিক আছে মানে কি? অবশ্যই করবেন। না হলে যেটা করা দরকার সেটাই করব।
ইউএনও ফয়সাল আহমেদ তখন ফোনে সংক্ষিপ্তভাবে উত্তর দিয়ে বলেন, ঠিক আছে। তবে বিএনপি নেতা এরপর আরও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার নেতার ছবি তুলেছেন আপনি ওখান থেকে। জাস্ট রিমেম্বার ইট।
এ সময় তিনি ইউএনওর রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন,নরসিংদী বাড়ি দেখান আপনি, না? কোন দল থেকে আসছেন আপনি?... কালকে পোস্টার ভদ্রলোকের মতো লাগাবেন। ফাইজলামি!
ঘটনার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, ডাইংপাড়া মোড় এলাকায় ফেস্টুন ও ব্যানার এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছিল, যা যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছিল এবং শহরের সৌন্দর্য ব্যাহত হচ্ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে এবং পৌরসভার নির্দেশনা অনুযায়ী তা সরানো হয়েছে।
তিনি বলেন, দুই-তিনবার মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হলেও কেউ সরায়নি। তাই পৌরসভার পক্ষ থেকে তা অপসারণ করে সংরক্ষণে রাখা হয়েছে। উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল এবং সব রাজনৈতিক দলের পোস্টার সরানো হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, পৌর এলাকায় ব্যানার বা ফেস্টুন স্থাপন করতে হলে পৌরসভার অনুমতি ও পৌরকর প্রদান করতে হয়।
তবে কে এম জুয়েল এই অপসারণকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন। তাঁর অভিযোগ, ইউএনওর কাছে জনগণ অভিযোগ করেছে, আর আমরা কি মানুষ না? আমার ছবি তুলে ফেলুক আপত্তি নাই। কিন্তু আমার নেতার ছবিতে হাত দিয়েছে কেন?
তিনি আরও দাবি করেন, ইউএনও নিজে আমাদের এক লোককে ডেকে বলেছেন, যেখানে পোস্টার ছিল, দয়া করে আপনারা লাগিয়ে নেন। কিন্তু আমরা তো লাগাবো না। ইউএনওকেই লাগাতে হবে।
এদিকে গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম শাওয়াল বলেন, আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় পোস্টার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আমাদের না জানিয়ে এভাবে ফেস্টুন অপসারণ করে ঠিক করেননি ইউএনও। সেখানে আমাদের নেতার ছবি ছিল।