ডিসি আসছেন শুনে বৃষ্টির মধ্যেই রাতারাতি নির্মিত হলো সড়ক
- চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:২১ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৫

চট্টগ্রামের বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে একটি সড়কের দুরবস্থার কারণে ভোগান্তিতে ছিলেন। সড়কটি নির্মাণের জন্য বহুবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফরিদা খানমের বিদ্যালয় পরিদর্শনের খবর পাওয়ার পর হঠাৎ করেই রাতারাতি নির্মাণ করা হয়েছে সেই সড়কটি।
সোমবার গভীর রাতে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও সড়কের ইট বিছানোর (সোলিং) কাজ শেষ করা হয়। এই ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে ডিসি ফরিদা খানম বাঁশখালী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জয়ন্তী কর্নার, স্যানিটারি নেপকিন ভেন্ডিং মেশিন উদ্বোধন ও একটি আলোচনা সভায় অংশ নেন। বিদ্যালয়টির প্রধান ফটক উপজেলা সদরের প্রধান সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত। ডিসিকে বহনকারী গাড়ি যেন কাদা না মাড়ায়, সেই বিবেচনায় রাতের মধ্যেই ওই সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হয়।
পরদিন সকালে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা চমকে যান—যেখানে আগের দিন কাদা ছিল, সেখানে এখন ইট বিছানো সড়ক। স্থানীয় বাসিন্দারাও এতে বিস্মিত হন।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়কটি বহুদিন ধরেই বেহাল অবস্থায় ছিল। অনেকবার এর সংস্কারের দাবি জানানো হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। অথচ ডিসির সফরের খবরে এক রাতেই সড়ক নির্মাণ করে ফেলা হয়েছে। তাদের মতে, এই ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে, প্রশাসন চাইলে অনেক আগেই সড়কটি তৈরি হতে পারত। প্রশ্ন উঠছে—কেন এতদিন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের কাদা মাড়িয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে? স্থানীয়দের মন্তব্য, যদি ডিসি উপজেলার অন্য কাদা সড়কেও যেতেন, তাহলে সেগুলোও হয়তো একইভাবে রাতারাতি নির্মিত হতো।
সড়কটির নির্মাণে আনুমানিক সাড়ে তিন লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েকজন শ্রমিক জানান, এতে প্রায় ২০ গাড়ি বালু এবং ১৩ হাজার ইট ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ভারী বৃষ্টিতে তারা কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন না। ৩৩ জন শ্রমিককে প্রশাসনের কর্মকর্তারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাজ করিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোতোষ দাশ বলেন, অনেক আগে থেকেই আমরা মাঠের এক পাশে সড়ক নির্মাণের আবেদন করেছিলাম। সেটি না হওয়ায় জেলা প্রশাসকের আসার উপলক্ষে মাঠের মাঝখানে অস্থায়ী সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। তবে সেটি উঠে যাবে। এই সড়ক নির্মাণে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এদিকে বাঁশখালীর ইউএনও মোহাম্মদ জামশেদুল আলম দাবি করেছেন, সড়কটি শুধু জেলা প্রশাসকের জন্য নির্মাণ করা হয়নি। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অসুবিধা হচ্ছিল। এ কারণে প্রকল্পের মাধ্যমেই সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছে।