চট্টগ্রামে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না শারমিনকে (৩৫) বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে পাঁচজন নিহতের মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২ জুন) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তফা শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
এর আগে গত ১০ মে তামান্না শারমিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বাকলিয়ায় জোড়া খুন, হত্যার হুমকির মামলা রয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন বলেন, নগরের চান্দগাঁও থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে পাঁচজন নিহত হওয়ারর মামলায় তামান্না শারমিনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত বছরের জুলাই-আগস্টে নগরের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় গুলিতে মারা যান হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, মো. মাহিন, তানভীর সিদ্দিকী, শহীদুল ইসলাম ও ফজলে রাব্বি। এসব ঘটনায় করা পৃথক পাঁচ মামলায় তামান্না শারমিনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করে পুলিশ। আবেদনে বলা হয়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা ও গুলি চালায়। এসব ঘটনায় আসামিদের লোকজন ও অস্ত্র সরবরাহে তামান্না জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত বছরের ৩ আগস্ট বিকেলে বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন কদমতলী এলাকার জুতার দোকানের কর্মচারী শহীদুল ইসলাম ওরফে শহিদ (৩৭)। ওইদিন সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শহিদ। এ ঘটনায় ১৯ আগস্ট চান্দগাঁও থানায় হত্যা মামলা (নং ১৫) দায়ের করেন ভিকটিমের বড়ভাই।
১৮ জুলাই বিকেলে চান্দগাঁও থানাধীন বহদ্দারহাট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া। পরের দিন ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর চান্দগাও থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। একইদিন বহদ্দারহাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান কিশোর সাইমন ওরফে মাহিন, তানভীর সিদ্দিকী, মো. ফজলে রাব্বি। এসব ঘটনায় নগরের চান্দগাঁও থানায় পৃথকভাবে আরও তিনটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিতে পাঁচজন নিহতের মামলায় তামান্নকে গ্রেপ্তার দেখানো হলো।