শাস্তির মুখে রাজশাহীর ৯১৩ চালকল


April 2025/Rice Mil.jpg

ঠিক মতো সরবরাহ না করায় শাস্তির মুখে পড়ছে রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি চালকল। খাদ্য বিভাগ বলছে, কৃষক ও মিলারের অনীহায় এ বছর চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এ কারণে চুক্তি বাতিল, নিবন্ধন স্থগিত ও জামানত বাজেয়াপ্তের মতো শাস্তি হতে পারে প্রতিষ্ঠানগুলোর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েক দফা সময়সীমা বাড়িয়ে তিন মাস ধরে আমনের ধান-চাল সংগ্রহ করেও রাজশাহী বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। প্রায় সাড়ে ৫৬ হাজার টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও কিনতে পেরেছে মাত্র ৮২৮ টন। এক লাখ ১১ হাজার ২৬৩ টন সিদ্ধ চালের লক্ষ্যমাত্রায় সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ হাজার ৭০৭ টন। লক্ষ্যমাত্রার থেকে আতপ চাল সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ৩৬২ টন কম।
 
বিভাগের ৮ জেলায় খাদ্য অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তিযোগ্য সেদ্ধ ও আতপ চাল কলের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩০টি। কিন্তু চাল দেয়ার চুক্তি করেনি ৪৫টি অটোসহ ৭৫১টি মিল। আবার চুক্তি করলেও গুদামে চাল দেয়নি এমন মিল ১৬২টি। লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ ৩০টি এবং ৫০ শতাংশ চাল দিয়েছে ৭১টি মিল। চুক্তি না করা ও ঠিকমতো চাল না দেয়ায় ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। দুই বছরের চুক্তি বাতিল, নিবন্ধন স্থগিত ও জামানত বাজেয়াপ্তের মতো শাস্তি হবে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বলছে খাদ্য বিভাগ।
 
রাজশাহী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন বলেন, ‘যারা ৬০ শতাংশ চাল দিয়েছে, তাদেরকে জামানত ফেরত দেবো বিশেষ বিবেচনায়। আর যারা এর কম দিয়েছে, তারা যতটুকু চাল দিয়েছে, ততটুকু হারে ফেরত পাবে।’
 
মিলারদের ভাষ্য, সরকারি দামে ধান বিক্রি করলে মণ প্রতি লোকসান হত অন্তত এক হাজার টাকা। চালে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা। যদিও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, চালকল মালিকরা প্রতি কেজি চাল ও এর উপজাত বিক্রি করে লাভ করে ৮ থেকে ১৩ টাকা।
 
এবার বাড়তি দামের কারণে আগের বছরগুলোর পুরনো চাল সরকারি গুদামে বেশি এসেছে, অভিযোগ অনেকের। কারসাজি, প্রক্রিয়া জটিলতা, বাজারের চেয়ে কম দাম নির্ধারণের জন্য খাদ্য বিভাগকেই দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।
 
রাজশাহীর বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডিআইআরের প্রধান পরামর্শক সুব্রত কুমার পাল বলেন, ‘উপর থেকে চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্তের কারণে বাজারে ধান ও চালের যে ন্যায্য দাম, সেটা পাওয়া যায় না। এ কারণে দেখা যায়, সরকারকে নিম্ন মানের চাল সংগ্রহ করতে হয়। আর এ নিম্ন মানের চাল সংগ্রহ করার ফলে সাধারণ মানুষ ভুক্তভোগী হয়।’
 
আমন মৌসুমে সরকার প্রতি কেজি ধান ৩৩ টাকা, সেদ্ধ চাল ৪৭ টাকা ও আতপ চাল ৪৬ টাকা কেজি নির্ধারণ করেছিল।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×