বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার

আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) শুরু হচ্ছে আবাসন খাতের অন্যতম বড় আয়োজন রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার ২০২৫। রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউ তে অনুষ্ঠিতব্য এ ফেয়ার চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের ফেয়ারে মোট স্টল থাকছে ৬৫টি। প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৪২টি। এই ফেয়ারে ২টি গোল্ড স্পন্সর ও ১৪টি কো-স্পন্সরসহ আরও ১৬টি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি এবং ৫টি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস ও ৫ অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে।  

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রিহ্যাব চট্টগ্রাম অফিসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটির চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন রিহ্যাব চট্টগ্রামের রিহ্যাব নেতৃবৃন্দ। এ সময় রিহ্যাব পরিচালক ও রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটি কো-চেয়ারম্যান ১ মোহাম্মদ মোরশেদুল হাসান, রিহ্যাব চট্টগ্রাম রিজিওনাল কমিটি সদস্য সৈয়দ ইরফানুল আলম, সারিস্থ বিনতে নূর, নূর উদ্দিন আহাম্মদ, মোহাম্মদ মাঈনুল হাসান, ফেয়ার অর্গানাইজিং কমিটি সদস্য রেজাউল করিম, মোহাম্মদ জাফর, হৃষিকেশ চৌধুরী, এএসএম আবদুল গাফফার মিয়াজী, নূর মোহাম্মদ  উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বৈষম্যমূলক ড্যাপের কারণে দেশে আবাসন খাতে বিনিয়োগ স্থবিরতা চলছে। এর ফলে বাড়ছে না কর্মসংস্থান। অসংখ্য লোকজন বর্তমানে বেকার। নতুন প্রকল্প নিতে সমস্যা হওয়াতে তলানিতে এসে ঠেকেছে ফ্ল্যাট তৈরি। এই মুহূর্তে আবাসন খাতের কয়েকটা সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা নতুন বৈষম্যমূলক ড্যাপ।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ অবকাঠামোগত দিক দিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। একটা ফ্ল্যাট শুধু মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করে না, একটা সামাজিক অবস্থানও তৈরি করে। সেই সাথে নিশ্চিত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বিনিয়োগ। সরকারের রাজস্ব আয়, কর্মসংস্থান, রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ ২০০’-এর অধিক লিংকেজ শিল্প প্রসারের মাধ্যমে পুরো নির্মাণ খাত জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নির্মাণ খাতের অবদান প্রায় ১৫ শতাংশ।’

সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে দ্রুত ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) সংশোধন করে ২০০৮’-এর বিধিমালা কার্যকর করার দাবি জানানো হয়। 

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতি উপজেলায় গুচ্ছ আকারে ২৫-৩০ টি ২৫-৩০ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবন নির্মাণ করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে রিহ্যাব সদস্যদের সহযোগীতা করলে গ্রামে বসবাস করেও আধুনিক শহরের সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এতে করে আমাদের এই বিশাল জনসংখ্যার ছোট দেশে কৃষি জমিরও সাশ্রয় হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আমাদের সদস্য ও ক্রেতাদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে এই ফেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এক সাথে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান যাচাই-বাছাই করার সুযোগ রিহ্যাব ফেয়ার ছাড়া সম্ভব নয়। জীবন সংগ্রামের ব্যস্ততায় আমাদের সবার হাতেই এখন সময় কম। তাই, কম সময়ে এক ছাদের নিচে সব সেবা পাবেন ক্রেতারা। শুধু ফ্ল্যাট-প্লট ই নয়, এক সাথে গৃহঋণ এবং বাড়ি তৈরির নানা উপকরণও যাচাই করতে পারবেন ক্রেতারা। রিহ্যাব ফেয়ার সাধ ও সাধ্যের মধ্যে মনের মত ফ্ল্যাট বা প্লট খুঁজে নিতে ক্রেতাদের সাহায্য করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার ২০২৫-এ গোল্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে পূর্বাচল প্রবাসী পল্লী  লিমিটেড ও উইকন প্রপার্টিজ লিমিটেড। এছাড়া কো-স্পন্সর হিসাবে অংশগ্রহণ করছে ১৪ টি প্রতিষ্ঠান। এগুলো হল এরিয়েল প্রপার্টিজ লিমিটেড, আশিয়ান ল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট, সিটি হোম প্রপার্টিজ, সিএ প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট (সিপিডিএল), কনকর্ড রিয়েল এস্টেট, এপিক প্রপার্টিজ, ইক্যুইটি প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট, ফিনলে প্রপাটির্জ, জুমাইরাহ হোল্ডিং, মুনতাসির লিভিং, র‌্যানকন এফসি প্রপার্টিজ, স্যানমার প্রপার্টিজ, সিকিউর প্রপার্টি ম্যানেজমেন্ট ও শাইন ম্যাট্রিক্স বিল্ডার্স লিমিটেড (এসএমবিএল)। 

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, এন্ট্রি টিকেট এবং টিকেট কাউন্টার ও উদ্বোধনী অধিবেশনের স্পন্সর হয়েছে এ্যারিয়েল প্রপার্টিজ লিমিটেড, মিডিয়া সেন্টার ও প্রেস কনফারেন্সের স্পন্সর হয়েছে এ্যামিটি এ্যাপার্টমেন্ট ও ডেভেলপারস লিমিটেড, র‌্যাফেল ড্র স্পন্সর করেছে পার্ল হোমস লিমিটেড, ইনফরমেশন বুথ ও এন্ট্রি গেইট স্পন্সর হয়েছে শাইন ম্যাট্রিক্স বিল্ডার্স লিমিটেড। এছাড়া এপিক হেলথ কেয়ারের একটি বুথ থাকবে মেলা প্রাঙ্গনে। 

রিহ্যাব চট্টগ্রাম ফেয়ার ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদত হোসেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নুরুল করিম ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায়  রেডিসন ব্লুর মোহনা হলে ফেয়ারের উদ্বোধনী অধিবেশন  হবে। প্রথম দিন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা উদ্বোধনের পর দুপুর ২ টা থেকে মেলায় ঢুকতে পারবেন। বাকি দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত ক্রেতা দর্শনার্থীরা মেলায় ঢুকতে পারবেন। 

বিগত সময়ের ধারাবাহিকতায় এ বছরের মেলাতেও দুই ধরনের টিকেট থাকছে। একটি সিঙ্গেল এন্ট্রি অপরটি মাল্টিপল এন্ট্রি। সিঙ্গেল এন্ট্রি টিকেটের প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকেটের প্রবেশ মূল্য ১০০ টাকা। মাল্টিপল টিকিট দিয়ে দর্শীনার্থী মেলার সময় দর্শনার্থীরা ৪ বার ঢুকতে পারবেন। দর্শকদের জন্য লটারির মাধ্যমে প্রতিদিন থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কার।