সেন্টমার্টিন দ্বীপ বন্ধে দিশেহারা ব্যবসায়ীরা


Febuary (Naeem) 24/saint martin.webp

সেন্টমার্টিন দ্বীপের একজন কবির আহমেদ। এক সময় সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি। পেশা পরিবর্তন করে কবির আহমেদ এখন পর্যটন ব্যবসায়ী। নিজের ১০ বিঘা জমির ওপর গড়ে তুলেছেন দুইটি কটেজ। নিজে এবং পরিবারের লোকজন এই দুই কক্ষের কটেজ পরিচালনা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গেল বছর তিনেক আগে ভালো আয় রোজগার হলেও এখন কটেজের কক্ষ ভাড়া দিয়ে আগের মতো আয় রোজগার হয় না তাঁর। গেল দুই মাসে অন্তত এক মাস তাঁর কটেজের কোনো কক্ষই বুকিং হয়নি। ফলে অনেকটা হতাশ দ্বীপের বাসিন্দা কবির আহমেদ। আগামী দিনগুলোতে কীভাবে চলবেন সেই চিন্তাই তাঁর চোখে-মুখে।

কবির আহমেদের মতো ছোট ছোট আরও অনেক কটেজ ব্যবসায়ীর চোখে-মুখে নেমে এসেছে অন্ধকার। কারণ আগামী ৯ মাস কীভাবে চলবেন সে হিসেব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। 

দ্বীপের বাসিন্দা ও পর্যটন ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, ‘বাপ দাদার পেশা ছিল সাগরে গিয়ে মাছ ধরা। গেল এক দশক আগে যে পেশা ইতি টেনেছিল, পুনরায় সে পেশায় ফিরে যাওয়াটা একেবারে অসম্ভব। দ্বীপে বিকল্প আয়ের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নিজেদের পরিবারের ভবিষ্যৎ কি হবে সেটার কোনো উত্তর কারো কাছে নেই। প্রায় ১২ হাজার জনসংখ্যা এই দ্বীপে বিশ শতাংশ মানুষ এখনও জেলে পেশায় রয়েছে। বাকি অধিকাংশরই কাজের সন্ধানে দ্বীপ ছেড়ে অন্যত্র যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।’

এদিকে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে কক্সবাজার থেকে কোনো ধরনের পর্যটনবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়নি।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সেন্টমার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিষয়ে প্রতিবাদ করেছে দ্বীপের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, আগামী একটি মাস দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক। সরকার তাদের সিদ্ধান্তে অটল থেকে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বীপে পর্যটক গমনাগমন বন্ধ করে দেয়। 

জাহাজ ব্যবসায়ীদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘আগে ছয় মাস পর্যটক যেত সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এখন পরিবেশ রক্ষার নামে সরকার মাত্র তিন মাসের জন্য পর্যটক যাওয়া অনুমতি দেয়। তাও নানান শর্ত জুড়ে দিয়ে পর্যটনকে বাধাগ্রস্ত করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তিন মাসের অনুমতি দিলেও ব্যবসা হয়েছে মাত্র দুই মাস। এই দুই মাসের আয় দিয়ে বাকি ১০ মাস দ্বীপের মানুষসহ পর্যটনের সঙ্গে জড়িতদের চলতে খুব কষ্ট হবে। আগে ছয় মাস পর্যটক যেত সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এখন পরিবেশ রক্ষার নামে সরকার মাত্র তিন মাসের জন্য পর্যটক যাওয়া অনুমতি দেয়। তাও নানান শর্ত জুড়ে দিয়ে পর্যটনকে বাধাগ্রস্ত করেছে।’

হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, ‘তিন মাসের অনুমতি দিলেও ব্যবসা হয়েছে মাত্র দুই মাস। এই দুই মাসের আয় দিয়ে বাকি ১০ মাস দ্বীপের মানুষসহ পর্যটনের সঙ্গে জড়িতদের চলতে খুব কষ্ট হবে।’

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×