জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ পুলিশকে প্রত্যাহারের নির্দেশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১১:৪৩ এম, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে বাংলাদেশ পুলিশের একমাত্র অবশিষ্ট কনটিনজেন্টকে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র থেকে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা দেশের দীর্ঘদিনের শান্তিরক্ষা অবদানের ওপর নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে।
১৮০ সদস্যের এই ইউনিটের মধ্যে ৭০ জন নারী পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা আগামী নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরবেন। মাত্র দুই মাস আগে জাতিসংঘের একমাত্র সর্ব-মহিলা পুলিশ ইউনিট হিসেবে এই কনটিনজেন্ট কঙ্গোতে মোতায়েন হয়েছিল।
জাতিসংঘের নথিতে দেখা গেছে, কঙ্গো, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ও দক্ষিণ সুদানের মিশনে ধাপে ধাপে সদস্যসংখ্যা কমানো ও প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের কনটিনজেন্ট সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে আসছে, যেখানে অন্য দেশ যেমন ক্যামেরুন, সেনেগাল ও মিশরের কনটিনজেন্ট কেবল আংশিকভাবে হ্রাস করা হবে।
জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ পুলিশ সূত্র জানায়, বাজেট সংকট ও জনবল হ্রাস নীতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের একজন অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, "কঙ্গোতে জাতিসংঘ মিশনের পুলিশ কমিশনার আমাদের ইউনিট কমান্ডারকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। এখনো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাইনি। বাংলাদেশের এফপিইউ সব সময় দায়িত্বপালনে সফল হয়েছে, তাই এই সিদ্ধান্ত হতাশাজনক।"
পুলিশ সূত্রের আরও জানা গেছে, ২০ অক্টোবরের মধ্যে ১৬২ জন সদস্যকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে, এবং বাকি ১৮ জন প্রশাসনিক ও লজিস্টিক কার্যক্রম শেষ করে নভেম্বরের মধ্যে দেশে ফিরবেন। বর্তমান ইউনিটটি আগস্টে কঙ্গো পৌঁছে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যক্রম শুরু করেছিল, এক মাসের মধ্যেই তাদের ফেরার নির্দেশ দেওয়া হলো।
২০০৫ সাল থেকে কঙ্গোতে বাংলাদেশ পুলিশের নারী এফপিইউ দায়িত্ব পালন করছে। চলতি বছরের আগস্টে জাতিসংঘের মহাসচিবের কঙ্গো বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি এই ইউনিটের মেডেল প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন, যা ইউনিটটির কার্যকারিতা ও আস্থা প্রদর্শন করে।
উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, এটি বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা ইতিহাসে বড় আঘাত। এক কর্মকর্তা বলেন, "তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই ইউনিট দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছে। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে যদি এটি বন্ধ হয়, তা জাতীয় গৌরবের জন্য বড় ধাক্কা।"
১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ পুলিশ জাতিসংঘের মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। পুলিশের প্রথম মিশন ছিল নামিবিয়ায়। ২০২৫ সালের মে মাস পর্যন্ত দেশের ২১ হাজারের বেশি পুলিশ কর্মকর্তা বিশ্বজুড়ে ২৪টি দেশে ২৬টি মিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন।