আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন


আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়লেন

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী আনন্দ মোহন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহা. সাকির হোসেন মুচলেকা দিয়ে ক্যাম্পাস ছেড়েছেন।

সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে তিনি লিখিতভাবে জানান, ‘চলমান সংকট উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন করবেন না।’ এরপর তিনি কলেজ ত্যাগ করেন।

এর আগে দুপুরে কলেজের নতুন ভবনের চতুর্থ তলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা অধ্যাপক সাকির হোসেনকে ‘আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও হাসিনার দোসর’ আখ্যা দিয়ে তার অপসারণ দাবি করেন

প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে ভবন থেকে বের করে আনে। এ সময় তিনি কলেজের প্যাডে লিখিতভাবে দায়িত্ব থেকে বিরত থাকার কথা উল্লেখ করে স্বাক্ষর করেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেনের ছোট ভাই রাকিব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং সাগর হত্যা মামলার আসামি। শিক্ষার্থীদের দাবি, “সাকির হোসেন চিহ্নিত আওয়ামী পরিবারের সদস্য ও হাসিনার দোসর। তাকে এই কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে শিক্ষার্থীরা দেখতে চাচ্ছে না।”

তারা আরও জানান, এ দাবিতে তারা এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

এক শিক্ষার্থী মোহন হোসেন বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন দেশ পেয়েছি। কলেজে আমরা কোনো ফ্যাসিস্টকে দেখতে চাই না। তাই সব শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামে।”

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, “খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ক্যাম্পাসে পুলিশ পাঠানো হয়। নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন। বর্তমানে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক।”

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৮ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে রাষ্ট্রপতির আদেশে অধ্যাপক মো. আমান উল্লাহকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি একই কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করতেন।

তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ ওঠে। এতে বিএনপিপন্থি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয় এবং তার অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।

পরে চলতি বছরের ৩১ জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় অধ্যাপক আমান উল্লাহকে ওএসডি করা হয় এবং উপাধ্যক্ষ মোহা. সাকির হোসেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×