রাবিতে অধ্যাপকের সঙ্গে সহকর্মীর শারীরিক অপ্রীতিকর আচরণ, তদন্তের দাবি
- বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০১:২৩ পিএম, ০৪ জুলাই ২০২৫

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা অনুষদের এক সিনিয়র অধ্যাপককে শারীরিকভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে একই অনুষদের এক সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে গত বুধবার, অনুষদের ডিনের কক্ষে অনুষ্ঠিত ২৯তম সাধারণ সভায়।
অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুস ছালাম চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
অভিযোগকারী অধ্যাপক আবদুস সোবাহান (চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগ) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচারকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, সভায় সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স ও চারুকলায় ডিপ্লোমা-সার্টিফিকেট কোর্স চালুর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন তিনি। তার মতে, এসব কোর্স চালু হলে চারুকলা অনুষদের মৌলিক স্বকীয়তা নষ্ট হবে। তিনি বলেন, এসব প্রোগ্রাম অতীতে "ফ্যাসিস্ট সরকার" সময় চালু হয়েছিল এই মন্তব্যকে ঘিরে অনুষদের একাধিক শিক্ষক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
সোবাহান অভিযোগ করেন, কথোপকথনের এক পর্যায়ে সহযোগী অধ্যাপক আবদুস ছালাম তাকে সভা থেকে বের করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। এরপর উত্তেজনার মধ্যে সোবাহান তার দিকে এগিয়ে প্রশ্ন করলে, ছালাম তাকে কোমর জড়িয়ে তুলে জোরপূর্বক চেয়ারে বসিয়ে দেন।
সোবাহানের ভাষায়, “সব সহকর্মীর সামনে এমন শারীরিক আচরণ একজন সিনিয়র অধ্যাপকের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক এবং এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধির চরম লঙ্ঘন।”
এদিকে অভিযুক্ত আবদুস ছালাম বলেন, “আমি তাকে চেয়ারে বসিয়েছি ঠিক, তবে সেটা লাঞ্ছনার উদ্দেশ্যে নয়। সভায় তিনি একা ভিন্নমত তুলে ধরে উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন এবং রাজনৈতিক বক্তব্য দেন, যা সভার বিষয়বস্তুর সঙ্গে সম্পর্কহীন ছিল। পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য আমি কেবল পরিস্থিতি সামাল দিয়েছি।”
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও চারুকলা অনুষদের অধিকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী জানান, সোবাহান সভার এজেন্ডার বাইরে গিয়ে উত্তেজিতভাবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তখন সহকর্মীরা তাকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করলে, তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সহযোগী অধ্যাপক ছালামসহ কয়েকজন তাকে তার জায়গায় বসিয়ে দেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের সিদ্ধান্ত জানায়নি, তবে এ ঘটনা শিক্ষক মহলে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।