ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে রায়সাহেব মোড় প্রদক্ষিণ করে বিশ্বজিৎ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশও অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে শাখা শিবিরের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা ওসমান হাদির ওপর যে অতর্কিত হামলা হয়েছে, তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই এ হামলা প্রমাণ করেছে- ইন্টেরিম সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা হাদির পাশে আছি এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের জুলাই আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ বলেন, “৫২, ৭১, ৯০ এবং সর্বশেষ ২৪- বারবার আমরা রক্ত দিয়েছি বাংলা ও বাংলার মানুষের জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের রক্তের বিনিময়ে কিছু কুলাঙ্গার বারবার বাংলার মানুষের সঙ্গে বেইমানি করে যাচ্ছে। এর প্রতিফলন আমরা ২০২৪ সালেও দেখেছি। আমি সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে বলতে চাই- ওসমান হাদি একা নন, বাংলার প্রতিটি ঘরেই হাদির মতো মানুষ আছে। আপনারা কতজনকে গুলি করবেন? এবার বাংলা আমরা বাংলার মানুষের করেই ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ।”
লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার অওরীন বলেন, ‘আগে খুন-গুম ছিল খুব সাধারণ ঘটনা। ২৪-এর জুলাই আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সত্যিকারের স্বাধীনতা ফিরে পাওয়া। কিন্তু হাদি ভাইয়ের মতো একজন প্রতিবাদী কণ্ঠ যখন নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তখনই তার ওপর হামলা- এটা আমাদের নিরাপত্তাহীনতার চরম প্রকাশ। যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদের উপযুক্ত শাস্তি চাই।’
শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত হত্যার উদ্দেশ্যে। এর দায় ইন্টেরিম সরকারকে নিতে হবে। ৫ আগস্টের পর ছাত্রসমাজের দাবির মূল কথা ছিল- স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের খুনিদের বিচার। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান বিচার হয়নি। যদি সরকার এভাবে নীরব থাকে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে না পারলে বাংলার ছাত্রসমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে গুলিবিদ্ধ হন শরিফ ওসমান হাদি। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।