
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রখ্যাত ক্রিকেটার ইমরান খান আবারও দেশের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। কারাগার থেকে তিনি মুনিরকে ‘পাকিস্তানের ইতিহাসের সবচেয়ে দমনমূলক একনায়ক’ এবং ‘মানসিকভাবে অস্থির এক ব্যক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
৭৩ বছর বয়সী ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে একাধিক মামলার কারণে কারাবন্দি রয়েছেন। তার অভিযোগ, আসিম মুনির কেবল নির্মম দমননীতি প্রয়োগ করে দেশ শাসন করছেন। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার ইমরান খানের অফিসিয়াল এক্স একাউন্ট থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “তার (মুনিরের) শাসনের অধীনে নির্যাতনের মাত্রা অভূতপূর্ব। ক্ষমতার নেশায় অন্ধ হয়ে মুনির যেকোনো কিছু করতে পারেন।”
ইমরান খান মে ৯, নভেম্বর ২৬ এবং মুরিদকে উল্লেখ করে বলেন, এসব ঘটনা ক্ষমতার অন্ধ ব্যবহার এবং বৈষম্যের স্পষ্ট উদাহরণ। তিনি দাবি করেছেন, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে তার দলের কর্মীরা নিহত হয়েছেন। ইমরান আরও বলেন, “নিরস্ত্র নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না। নারীদের বিরুদ্ধে এমন বর্বর আচরণ পাকিস্তানের ইতিহাসে আগে কখনও দেখা যায়নি।”
পিটিআই নেতা অভিযোগ করেছেন যে, কর্তৃপক্ষ তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে একাকী বন্দি রেখে মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি বলেন, “আমরা দাসত্বের চেয়ে মৃত্যুকেই শ্রেয় মনে করি। আসিম মুনির আমার ও আমার স্ত্রীর ওপর সম্ভাব্য সব ধরনের অবিচার চালাচ্ছেন। পাকিস্তানের ইতিহাসে কোনো রাজনৈতিক নেতার পরিবার এত নির্দয় নির্যাতনের শিকার হয়নি। আমি আবারও স্পষ্ট করে বলছি- সে (মুনির) যা-ই করুক না কেন, আমি কখনোই তার সামনে মাথা নত করব না।”
ইমরান খান জানিয়েছেন, তার দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) কোনো অবস্থাতেই ‘ফর্ম-৪৭ সরকার’ বা সামরিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংলাপে বসবে না। তিনি বলেন, “একটি পুতুল সরকারের সঙ্গে আলোচনা অর্থহীন, যার প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি প্রশ্নের আগে বলেন, ‘আমি জিজ্ঞেস করে আসি’। আমরা যখনই সংলাপের চেষ্টা করেছি, দমনপীড়ন আরও বেড়েছে। এখন সমস্ত ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে, আসিম মুনিরের। তিনি নিজের পদ রক্ষায় যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তার বিরুদ্ধে চলমান আইনি মামলা গুলো ইচ্ছাকৃতভাবে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “সকলেই জানে এসব মামলা ভিত্তিহীন এবং শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়বে। তাই এগুলোর শুনানি বারবার স্থগিত করা হচ্ছে।”
সংলাপের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তার নতুন রাজনৈতিক জোট ‘তেহরিক তাহাফুজ-এ-আইন পাকিস্তান’ (সংবিধান রক্ষার আন্দোলন)-এর অংশীদার মাহমুদ খান আচাকজাই ও আল্লামা রাজা নাসির আব্বাস।