
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার মো. মুজাহিদুল ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) আলফাডাঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন তিনি। জিডিতে অভিযোগ করা হয়, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান ওরফে হাসিব শেষকালে তিন দফা মেসেঞ্জার কল ও দুটি অডিও পাঠিয়ে তাকে প্রাণনাশের কথা শোনিয়েছেন।
জিডিতে মুজাহিদুল বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে এসব ফোন কল ও অডিও মেসেজ আসে। তিনি আলফাডাঙ্গা পৌর বিএনপির নবগঠিত কমিটিতে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তির অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এক সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন। বিশেষত ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য নুরুল হাসান মিয়ার ছোট ভাই হাসিবুল হাসানকে গণঅভ্যুত্থানের পর হঠাৎ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক করা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন—এটাই সম্ভবত হুমকির সূত্র।
জিডিতে মুজাহিদুল আরও বর্ণনা করেছে যে, ওই নেতা তাকে বারবার ফেসবুক মেসেঞ্জারে ফোন করে এবং একাধিক অডিও পাঠিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে গালিগালাজ করেন। জিডিতে হাসিবুলের কয়েকটি কথাও উদ্ধৃত করা হয়েছে “তুই লেখার কে? আমি আসতছি, তোর হাড্ডি খুলে নিব। তোর প্রত্যেক জয়েন্ট আলাদা করে দিবানি। আমি আইসে তোর হাড্ডি ভাঙবানি। তুই আমাকে চিনিস? তোর বড় বড় বাপরা আমাকে চেনে।”
আবার জিডিতে আরও উল্লেখ আছে যে, হাসিবুল বলেছে— “আমি একটা দলের পদধারী লোক। তুই আমার সম্পর্কে হুট করে লেখিস কিভাবে? তুই লেখার কে? তোকে লেখার স্পর্ধা দিছে কে? তোর বাড়ি কোথায়? তুই বাংলাদেশের যেই প্রান্তেই থাকিস, সেখান থেকে ধরে এনে ঝুলাবো। তোকে মেরে আলফাডাঙ্গা চৌরাস্তায় ঝুলিয়ে রাখবো।”
হুমকির কারণে মুজাহিদুল এবং তার পরিবারের নিরাপত্তাহীনতার কথা জিডিতে বলা হয়েছে; তিনি যে কোনো মুহূর্তে নিজের বা পরিবারের ওপর আক্রমণের আশঙ্কা করছেন।
হাসিবুল হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি বিএনপি করি, আর ও (মুজাহিদুল) ছাত্রলীগ করে। সে আমাকে চার্জ করে বলে, আমি কিভাবে সম্পাদক হলাম। একজন সাংবাদিক তো কোনো দলের রাজনীতি করতে পারেন না এমন মন্তব্য করে হাসিবুল বলেন, কিন্তু সে দল করে। একজন সাংবাদিক ঘটনা জানতে চাইতে পারেন, কিন্তু চার্জ করবেন কেন?” তিনি আরও দাবি করেন যে, প্রচারিত অডিও ক্লিপটি সম্পাদিত—তার কথাগুলো কেটে-ছেঁটে প্রচার করা হয়েছে এবং তিনি কাউকে প্রাণনাশের হুমকি দেননি।
আলফাডাঙ্গা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ জালাল আলম জিডি গ্রহণের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে; বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।